কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে বেরুবাড়ীর খেলারভিটা থেকে কালীগঞ্জের সিঅ্যান্ডবি বাঁধ পর্যন্ত দুধকুমার নদের প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকার ভাঙন রোধে ২৫ হাজার জিও ব্যাগ ফেলার কথা ছিল।

কিন্তু তার বদলে মাত্র দুই হাজার বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি লাপাত্তা হয়ে গেছে। 

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের শাখা কর্মকর্তা উপসহকারী প্রকৌশলী মহিবুল ইসলাম জানান, কেন কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে তা জানতে চেয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পরপর দুবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।
 
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডর একটি সূত্র জানিয়েছে, দুধকুমার নদের ভাঙনরোধে জিও ব্যাগ প্রতিস্থাপন করার জন্য চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এক কোটি টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়। যাচাই-বাছাই শেষে কাজটি পায় রংপুরের মেসার্স খোরশেদ আলম নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। যথাসময়ে কাজটির উদ্বোধনও করা হয়। উদ্বোধনের পর তিন-চারদিন কাজ করে এলোমেলোভাবে মাত্র দুই হাজার জিও ব্যাগ ফেলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এরপরই কাজ বন্ধ রেখে চলে যায় তারা। আগামী নভেম্বর মাসে কাজটি শেষ করার সময়সীমা নির্ধারিত রয়েছে।
 
এদিকে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে নাগেশ্বরী উপজেলার কালীগঞ্জ, নুনখাওয়া, বামনডাঙ্গা, বেরুবাড়ী, নারায়ণপুর, বল্লবের খাস, কচাকাটাসহ প্রায় ৩০টি পয়েন্টে বেড়েছে দুধকুমারের ভাঙন। দ্রুত জিও ব্যাগ প্রতিস্থাপনের কাজ শেষ করা না হলে এসব এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রাম ও ফসলি জমি নদের গর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

দুধকুমারের পাড়ের বাসিন্দা শামছুল হক, কৃষ্ণ চন্দ্র, আশরাফুল আলম, নুর বখস মোল্লা, অনিল চন্দ্র, হরিশ চন্দ্রসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভাঙনরোধের কাজ শুরু হওয়ার পর তাঁরা ভেবেছিলেন হয়তো ভিটেমাটি হারাতে হবে না। কিন্তু ঠিকাদার কাজ বন্ধ রাখায় অব্যাহত নদের ভাঙনে এখন সর্বস্ব হারাতে বসেছেন তাঁরা। দ্রুত কাজ শেষ না হলে নিজেদের শেষ সম্বলটুকু দুধকুমারে বিলীন হতে দেখতে হবে বলে আশঙ্কা তাঁদের।
 
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী মহিবুল ইসলাম জানান, নির্ধারিত সময়ে কাজটি শেষ না হলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

তবে এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স খোরশেদ আলমের কারো সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। প্রতিষ্ঠানটির সব মোবাইল নম্বরই বন্ধ পাওয়া যায়।