গাজীপুর নগর ভবনে আ.লীগের মারামারি

গাজীপুর সিটি করপোরেশনে দরপত্রের শিডিউল কেনা ও লেনদেন নিয়ে আজ বুধবার আওয়ামী লীগ সমর্থিত দুই ঠিকাদার ও তাঁদের সমর্থকদের মধ্যে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। তাঁরা নগর ভবনে ব্যাপক ভাঙচুর এবং বিভিন্ন কক্ষ ও নথিপত্র তছনছ করেন। এ সময় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের তিন কাউন্সিলর, দুই ঠিকাদারসহ আটজন আহত হয়েছে।
কাউন্সিলর আজিজুর রহমান শিরিশ, শওকত আলমসহ স্থানীয় লোকজন জানান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের দুটি অঞ্চলের কাজের শিডিউল কেনা ও নিজেদের মধ্যে পাওনা টাকা নিয়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগর ভবনের তৃতীয় তলায় দুই ঠিকাদার জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহজাহান মিয়া সাজু এবং বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট গাজীপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রিপনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে শাহজাহান মিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে রিপনকে মারধর করেন। খবর পেয়ে রিপনের ভাই গাজীপুর পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। এ সময় তাঁরা শাহজাহানকে মারধর করেন। এ খবর পেয়ে শাহজাহানের লোকজন লাঠিসোটা ও রড নিয়ে নগর ভবনে এসে বিভিন্ন কক্ষে রিপন ও তাঁর ভাই আলী হোসেনকে মারধর করেন। একপর্যায়ে তাঁরা সিটি করপোরেশনের নগর ভবনের দ্বিতীয় তলায় ২০১ নম্বর কক্ষে হামলা চালিয়ে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আকবর হোসেনের টেবিলের কাচ ভাঙচুর ও নথিপত্র তছনছ করেন। তাঁরা বিভিন্ন কক্ষের দরজা-জানালার কাচ ও বিভিন্ন স্থানে থাকা ফুলের টব ভাঙচুর করেন। এতে উভয় ঠিকাদারসহ পাঁচজন আহত হন। এ ঘটনার সময় উভয় পক্ষকে থামাতে গিয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর মো. জান্নাতুর রহমান, শওকত আলম ও আয়েশা খাতুন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে ওই ঘটনার খবর পেয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ টঙ্গী থেকে নগর ভবনে ছুটে আসেন। এ সময় তিনি জানান, দুই ঠিকাদারের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ হারুন অর রশীদ দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
এ ব্যাপারে ঠিকাদার কামরুজ্জামান রিপন জানান, তিনি শাহজাহানের কাছে চার লাখ ১৭ হাজার টাকা পান। এ ছাড়া মঙ্গলবার তিনি সিটি করপোরেশনের ২ ও ৩ নম্বর জোনের শিডিউল কেনেন। পাওনা টাকা চাইতে গেলে এবং শিডিউল কেনার কারণে শাহজাহানের লোকজন তাঁদের মারধর করেছেন।