নারীসহ ভুয়া পাঁচ সাংবাদিককে জেল-জরিমানা
গাজীপুরে বড় সাংবাদিক পরিচয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে টাকা দাবি করায় নারীসহ পাঁচ প্রতারককে অর্থদণ্ডসহ কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। আজ মঙ্গলবার (১৩ জুন) বিকেলে গাজীপুরের কালীগঞ্জে উপজেলা ভূমি অফিসে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, আজ দুপুরে গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) অফিসে একটি মাইক্রোবাসযোগে আসে নারীসহ পাঁচ প্রতারক। তাদের সঙ্গে বিটিভিসহ বিভিন্ন মিডিয়া হাউসের স্টিকার, ভিজিটিং কার্ড, বুম ছিল। তারা নিজেদের বড় সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ওই কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আর্থিক সুবিধা দাবি করে। তিনি তাতে রাজি না হলে সবশেষে তারা দূর থেকে এসেছে তাই গাড়ির তেল খরচ ও দুপুরের খাবারের জন্য অর্থ দাবি করে। তখন ওই কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট মিডিয়া হাউস ও স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখন সাংবাদিক পরিচয়দানকারী ওই পাঁচ জন প্রতারক প্রমাণ হয়। তাই তাদের আটকে ফেলে অফিসের কর্মচারী ও স্থানীয়রা। আর তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন মিডিয়া হাউসের আইডি কার্ড, বুম ও বিটিভির স্টিকারযুক্ত মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন মালামাল জব্দ করা হয়।
এরপর বিকেলে গাজীপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) উম্মে হাফছা নাদিয়া ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত ভুয়া পাঁচ সাংবাদিককের প্রত্যেককে তিন মাসের করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন। এ সময় তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাফছা নাদিয়া বলেন, ‘গণ উপদ্রব দণ্ডবিধিতে এই দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। এর আগেও তারা একাধিকবার এই অফিসে এসে টাকা দাবি করেছিল।’
দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলো নেত্রকোনার সদরের মনিরুজ্জামান (৫৪)। সে নিজেকে বিটিভির খোঁজখবর অনুষ্ঠান ও সাপ্তাহিক এশিয়া বার্তার সাব-এডিটরের পরিচয় দেয়। গাজীপুর মহানগরীর পূবাইল থানার করমতলা এলাকার মাজহারুল ইসলাম দেওয়ান ওরফে অনিক (২৪)। সে নিজেকে দৈনিক আজকের আলোকিত সকালের ক্রাইম রিপোর্টার পরিচয় দেয়। একই পত্রিকার ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি পরিচয় দেয় টঙ্গীর আরিচপুর এলাকার নাজমুল ইসলাম সেলিম সরকার (৩৪) ও টঙ্গীর এরশাদনগর এলাকার কামরুজ্জামান (২৪)। এ ছাড়া একই পত্রিকার রিপোর্টার পরিচয় দেয় ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার সোয়াইতপুর গ্রামের রোজিনা আক্তার (১৯)।
এদিকে রায় ঘোষণাকালে আদালতের কাছে নিজের ভুল স্বীকার করে সাপ্তাহিক এশিয়া বার্তার সাব-এডিটর পরিচয়দানকারী মনিরুজ্জামান। সে জানায় স্থানীয় এক টেলিভিশন সাংবাদিকের আমন্ত্রণে তারা ওই অফিসে আসে।