বাংলাদেশের পক্ষে ভারতের ওকালতি করার কিছু নেই : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে কী বলতে হবে এটা তিনি (ভারতের প্রধানমন্ত্রী) বেশ ভালো করেই জানেন। এ নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে ভারতের ওকালতি করার কোনো প্রয়োজন নেই। আমরা জানি ভারত গণতান্ত্রিকভাবে বেশ শক্তিশালী রাষ্ট্র। দেশটিতে ধারাবাহিকভাবে গণতন্ত্র রয়েছে।
গণভবনে আজ বুধবার (২১ জুন) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সাম্প্রতিক সুইজারল্যান্ড ও কাতার সফরের ফলাফল সম্পর্কে গণমাধ্যমকে অবহিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সংবাদ সম্মেলন করেন। আজ বুধবার (২১ জুন) দুপুর ১২টার পরে গণভবনে এ সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সফরের বিষয়ে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এরপর সিনিয়র সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চেয়ে বলেন, “ভারতের প্রধানমন্ত্রী এখন যুক্তরাষ্ট্র সফরে রয়েছেন। এ বিষয়ে ভারতের ইংরেজি পত্রিকা ‘হিন্দুস্তান টাইমস’ একটি সংবাদও প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতির কাছে বাংলাদেশের হয়ে কথা বলার জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও এমন এটি বক্তব্য দিয়েছেন বলে পত্রিকায় উল্লেখ করা হয়েছে। সবমিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক, যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত এসব বিষয়ে আপনি পরিষ্কার করবেন কি না?”
এ প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যকে ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ভারত বাংলাদেশ সম্পর্কে বেশ ভালো করেই জানে, তাদের কী বলতে হবে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ওকালতি করার প্রয়োজন হবে না। অথচ পত্রিকাগুলো লিখেছে, বাংলাদেশের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ওকালতি করার জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী (ড. মোমেন) অনুরোধ করেছেন। বিষয়টি পুরোটাই উল্টো।’
এ অবস্থায় ওই সাংবাদিক আবারও প্রশ্ন করেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বিষয়টি আপনি একটু স্পষ্ট করবেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি তো বললামই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল। এখন তারা কী চায়। আমি যদি এখন সেন্টমার্টিন দিয়ে দিই তাহলে আমিও ক্ষমতায় থাকতে পারি। আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কন্যা। এটা আমার হাত দিয়ে হবে না। গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিলে আমিও ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে পারতাম। আমার দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলার সুযোগ দিব না।
শেখ হাসিনা বলেন, আমার দেশের মাটি ব্যবহার করে কেউ সন্ত্রাসী কার্যক্রম করবে, নাশকতা করবে সেটা হতে দেব না। কেননা এ অঞ্চলে আমরা শান্তি চাই, আমরা শান্তিতে বিশ্বাসী। রোহিঙ্গারা যখন এসেছিল তখন আমরা মিয়ানমারের সাথে কোন সংঘাতে জড়াইনি। কারণ আমরা শান্তি চাই।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, বাংলাদেশ ছোট্ট ভূখণ্ড কিন্তু বিশাল জনগোষ্ঠী। সবার খাদ্য, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা আমাদের পূরণ করতে হয়। আমাদের জনসংখ্যা যত, কিন্তু চাষাবাদের জমি সীমিত। আমরা আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত রেখেছি। মূল্যস্ফীতি যেভাবে বেড়েছে, তা নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছি। আমাদের হাতে যেগুলো আছে, সেগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। কিন্তু বাইরের থেকে যা আনা হচ্ছে তার দাম বেড়ে যাচ্ছে।