দালালের খপ্পরে পড়ে নিঃস্ব শতাধিক যুবক
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2024/02/08/madaripur-adom-dalal-khokon.jpg)
মাদারীপুরের এক আদম বেপারির খপ্পরে পড়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে শতাধিক যুবক। ৩০-৩৫টি গ্রামের শতাধিক যুবকের কাছ থেকে কয়েক কোটি নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন খোকন চোকদার নামে এক আদম বেপারি (দালাল)।
এই ঘটনায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করার পাশাপাশি বারবার প্রশাসনের কাছে ধরনা দিয়েও এর সমাধান পাচ্ছেন না ভুক্তভোগী যুবকরা।
অভিযোগ উঠেছে, একাধিক মামলা হলেও অদৃশ্য কারণেই ধরাছোঁয়ার বাইরে অভিযুক্ত খোকন চোকদার। যদিও পুলিশ বলছে, তাঁকে ধরতে চলছে অভিযান।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার মাদ্রা গ্রামের মোতালেব খানের ছেলে আল আমিন খানের কাছ থেকে বিদেশ পাঠানোর কথা বলে দালাল খোকন চোকদার সাত লাখ টাকা নেন। একই গ্রামের রুবেল হাওলাদার ও ইমরান খানের কাছ থেকেও সাত লাখ টাকা করে নেন। দুই মাসের মধ্যে বিদেশে নেওয়ার কথা থাকলেও আড়াই বছরেও কেউই যেতে পারেননি বিদেশে। এতে তাদের মধ্যে বিরাজ করছে হতাশা। শুধু আল আমিন, ইমরান, রুবেলই নন, এমন শতাধিক যুবকের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা নিয়ে উধাও খোকন চোকদার।
স্থানীয়ভাবে একবার বিষয়টি নিয়ে শালিসে বসা হয়েছিল। সেখানে প্রতারণার শিকার শতাধিক যুবকে অভিযোগ করেছিল।
ভুক্তভোগীদের দাবি, গবাদিপশু বিক্রি, জমি বন্ধকসহ সুদে এনে লাখ লাখ টাকা তুলে দেন খোকনের হাতে। তিনিও বিশ্বাস অর্জন করাতে অসহায় মানুষদের বিভিন্ন ব্যাংকের ব্ল্যাঙ্ক চেক দেন। অথচ খোকনের কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্টেই নেই টাকা। পাওনা টাকা ফেরত চাইলে টালবাহানা করে খোকন। একপর্যায়ে কোটি কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা এই খোকন। পরে আদালত ও প্রশাসনের দারস্থ হন ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগীদের দাবি, দেড় থেকে দুই বছর আগে বিদেশে নেওয়ার কথা বলে খোকন চোকদার সাত লাখ টাকা করে নেন। দুই থেকে আড়াই মাসের মধ্যে পর্তুগাল নিয়ে দিবেন, এত দিনেও তিনি বিদেশে নিতে পারেননি। এখন টাকা ফেরত চাইলে তিনি বাড়ি থেকে পালিয়েছেন।
আল-আমিন নামে এক ভুক্তভোগী বলেন, ‘বিদেশে নেননি, আর আমার পাওনা সাত লাখ টাকাও ফেরত দেননি। আমি ধার-দেনা করে টাকা দিছি। এখন খুব সমস্যার মধ্যে আছি।’
ভুক্তভোগী মাইনুল হোসাইন সুজন বলেন, ‘বিদেশে যাওয়ার জন্য আমি খোকন চোকদারকে টাকা দেই। কিন্তু সে বিদেশে নিচ্ছে না। আমি দুই বছর ধরে ভুক্তভোগী। আমার অনেক স্বপ্ন ছিল বিদেশে গিয়ে পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনব। কিন্তু সেটা আর হচ্ছে না। খোকন দালালের মুখে ছিল মধু, আর অন্তরে বিষ। এই প্রতারকের কথায় আমরা শতাধিক যুবক ফাঁদে পড়েছি। আমরা পাওনা টাকা ফেরত চাই, পাশাপাশি প্রতারক খোকনের বিচার চাই।’
মাদারীপুরের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বিদেশে নেওয়ার কথা বলে অসহায় মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন খোকন চোকদার। ভুক্তভোগীদের ভাষ্য মতে, কয়েক কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা তিনি। তাঁকে ধরতে চলছে অভিযান। শিগগিরই তিনি আইনের জালে ধরা পড়বেন।’
এদিকে ঘটনা জানতে অভিযুক্ত খোকন চোকদারের বাড়ি সদর উপজেলার মোস্তফাপুরে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। আর তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ থাকায় তার কোনো বক্তব্যই পাওয়া যায়নি।