বাস মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে অটোরিকশাচালকদের সংঘর্ষ, আহত ৩০
ভোলায় বাস মালিক-শ্রমিক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ, বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এতে সাংবাদিকসহ উভয় পক্ষের ৩০ জন আহত হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শহরের বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল বাস টার্মিনালে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাস টার্মিনালে অটোরিকশা রাখতে না দেওয়াকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরেই বাসমালিক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশামালিকদের দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এরই জের ধরে আজ সন্ধ্যার পরে দুই পক্ষ মুখোমুখি হয়। একপর্যায়ে বাস মালিক ও শ্রমিকরা রাস্তায় বাস রেখে জেলার সব রুটের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। এ সময় রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স এলে বাস শ্রমিকরা বাসটি রাস্তা থেকে সরিয়ে অ্যাম্বুলেন্সটি যেতে দেয়। পুনরায় বাস রাখতে গেলে অটোরিকশাচালক ও মালিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে বাস মালিক ও শ্রমিকদের ওপর চড়াও হয়।
এরমধ্যেই বাস মালিকদের একজনের ওপর হামলা চালায় অটোরিকশাচালক ও মালিকরা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুহূর্তের মধ্যেই সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে দুই পক্ষই দেশীয় অস্ত্র ,লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল নিয়ে একে অপরের ওপর হামলা চালায়। এ সময় টার্মিনালে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। মুহূর্তের মধ্যে উত্তেজনা আরও ছড়িয়ে পড়ে। এর পরই বেশ কয়েকটি বাস ও অটোরিকশায় আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
পুলিশ প্রথমে এলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ না করেই চলে যায়। পরে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সিএনজিচালিত অটোরিকশাগুলোতে গ্যাস সিলিন্ডার থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয় স্থানীয় বাসিন্দা এবং ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। পরে রাত ৯টার দিকে নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড, পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা যৌথভাবে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিপন চন্দ্র সরকার বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই বাস টার্মিনালের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বাস মালিক এবং সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকদের মাঝে দ্বন্দ্ব চলছিলে। তারই জেরে আজ উভয় পক্ষের মাঝে এই ঘটনা ঘটেছে। এসময় উভয় পক্ষের বেশ কিছু লোক আহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, দু’টি বাস এবং বেশ কয়েকটি অটোরিকশাতে আগুন দেওয়া হয়েছে। আমরা দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করেছি।