বরই চাষে বড় সাফল্য ঝিনাইদহের গোলাম রহমানের
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের বেথুলী গ্রামে সাত বছর আগে ৪ বিঘা জমিতে বরই চাষ শুরু করেন গোলাম রহমান। কাশ্মিরি আপেল, বল সুন্দরী, ভারত সুন্দরী জাতের বরইয়ের চারা সংগ্রহ করে জমিতে রোপণ করেন। ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় বাড়তে থাকে জমির পরিমাণ। বর্তমানে ২৫ বিঘা জমিতে রয়েছে বরই চাষ।
চলতি মৌসুমে প্রায় ২২ লাখ টাকার বরই বা কুল বিক্রয় করেছেন তিনি। গাছে এখনও যে ফল আছে, তাতে আশা করছেন ৩০ লাখ টাকার কুল বিক্রি করতে পারবেন। তিনি কালীগঞ্জ উপজেলার সেরা কুল চাষি নির্বাচিত হয়েছেন।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ২৫ বিঘা জমিতে সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ২ হাজার ৩০০ কুল গাছ। চার থেকে পাঁচ ফুট উচ্চতার কুল গাছগুলো কুলের ভারে মাটিতে পড়ার উপক্রম হওয়ায় বাঁশের চালা দিয়ে গাছগুলো ঠেকিয়ে রাখা হয়েছে।
মৌসুমে বাগানটিতে প্রতিদিন ২০ জন শ্রমিক দৈনিক ৬০০ টাকা মজুরি হারে কাজ করছেন। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পাইকারি ব্যবসায়ীরা কেজি প্রতি ৬০ থেকে ৭০ টাকা হারে বাগান থেকেই কিনছেন কুল বরই।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় ৫৫০ জন কুল চাষী বাণিজ্যিকভাবে কুল উৎপাদন করছেন। গত বছর উপজেলাটিতে ১১০ হেক্টর জমিতে কুল চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও চাষ হয়েছিল ১০০ হেক্টর জমিতে। যেখানে কুল উৎপাদন হয়েছিল ১ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। তবে চলতি বছর ১ হাজার ৯৮০ মেট্রিক টন কুল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে।
কুলচাষি গোলাম রহমান বলেন, ‘গত বছর আমি প্রায় ৩৭ লাখ টাকার কুল বিক্রয় করেছি। এ বছর ফলন ভালো হওয়ায় আশা করছি, ৫০ লাখ টাকার কুল বিক্রয় করতে পারব। চার বিঘা জমিতে প্রথম কুল চাষ শুরু করেছি। বর্তমানে আমার কুল চাষের জমির পরিমাণ ২৫ বিঘা। ভবিষ্যতে আমি আরও কুলের চাষ বাড়াতে চাই।’
কালীগঞ্জ উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাগর হোসেন বলেন, ‘সহজলভ্য চাষে অধিক মুনাফা অর্জন করা যায়, তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন উপজেলার সবচেয়ে বড় কুলচাষি গোলাম রহমান। আমরা কৃষি অফিসের থেকে তাকে পরামর্শ দিয়ে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করেছি।’
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুব আলম রনি বলেন, ‘গোলাম রহমান একজন সফল কুল চাষি। তিনি গত বছর উপজেলার সেরা কুল চাষি নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি এখন অন্য কুল চাষিদের জন্য উদহারণ। আমরা কুল চাষিদের নানাভাবে সহায়তা প্রদান করছি।’