দিনাজপুরের বীরগঞ্জে পাঁচ দফা দাবিতে মানববন্ধন ও রাস্তায় আলু ফেলে সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা। আজ বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় শহিদ মিনার চত্বরে আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমিতির আয়োজনে এ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

হঠাৎ কোল্ড স্টোরেজে ভাড়া বাড়ার প্রতিবাদে রাস্তায় আলু ফেলে ঢাকা-পঞ্চগড় মহাসড়ক অবরোধ করে আলুচাষি ও ব্যবসায়ী। তারা দুই ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে রাখে।

সংবাদ পেয়ে বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলে এলাহী ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল গফুর ঘটনাস্থলে আসেন। তাঁরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন। 

আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমিতি সভাপতি আব্দুল মালেক মানববন্ধনে জানান, কয়েক বছর ধরে তাঁরা আলু সংরক্ষণে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এতে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পুঁজি হারিয়েছেন। তাই, গত দুই বছরে আলু উৎপাদনে আলু চাষিরা আলু চাষ থেকে বিরত ছিলেন, ফলে দেশে আলুর ঘাটতি দেখা যায় এবং আলুর দাম অনেক বেড়ে ভোক্তার নাগালের বাইরে চলে যায়। চলতি মৌসুমে আলু উৎপাদনের জন্য আলুচাষিরা বেশি দামে জমি লিজ নিয়ে বীজ আলু এবং সার কিনে আলু আবাদ করেছেন। চলতি মৌসুমে আলু আবাদ বেশি হওয়ায় হিমাগার মালিকরা আলু সংরক্ষণে ভাড়া বাড়ানোর দুরভিসন্ধি করছেন। তাই বাধ্য হয়ে তাঁরা রাস্তায় নেমেছেন। 

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন ধলু, সাবেক ইউপি সদস্য আনসারুল ইসলাম, কৃষক শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

ব্যবসায়ী সমিতি সাধারণ সম্পাদক হর সুন্দর বর্মণ বলেন, কোল্ড স্টোরেজে ভাড়া বাড়ার প্রতিবাদে আমরা গত ৩ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, কৃষি বিভাগসহ বিভিন্ন জায়গায় আবেদন করেও কোনো প্রতিকার না পেয়ে বাধ্য হয়ে আজ এই প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করছি। 

আলুচাষিদের দাবিগুলো হলো কোল্ড স্টোরেজে প্রতি বস্তার বিপরীতে ন্যায্য ভাড়া নির্ধারণ, অহেতুক হয়রানি বন্ধ, আলু শুকানোর জন্য শেড চার্জ ফ্রি বা নামমাত্র করা, আলু সংরক্ষণের জন্য হিমাগার মালিকরা যে ঋণ দেন, তা ব্যাংকের সুদের হারের চেয়ে দুই শতাংশের বেশি নির্ধারণ না করা এবং সংরক্ষিত আলু পঁচে গেলে বা স্টোরেজ কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে নষ্ট হলে তৎকালিন বাজার অনুযায়ী সংরক্ষণকারীকে মূল্য পরিশোধ করা।

অবরোধ ও প্রতিবাদ সমাবেশে আলুচাষিরা সমস্যা নিরসনে সাত দিনের আলটিমেটাম দিয়ে রাস্তা ছেড়ে দেন।