বিমানের টিকিটের দাম নিয়ে প্রবাসীদের সুখবর দিলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/13/haasnaat-aabdullaah.jpg)
সৌদি আরব ও মালয়েশিয়াগামী বিমান টিকিটের দাম কমা নিয়ে প্রবাসীদের জন্য সুখবর দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। আজ বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় এক স্ট্যাটাসে তিনি এ তথ্য জানান।
এর আগে মঙ্গলবার প্রবাসীদের দুঃখ-কষ্টসহ নানা অভিযোগ উল্লেখ করে একটি লম্বা স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ।
সেই পোস্টের কমেন্টে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলকে মেনশন দিয়ে লিখেছিলেন, ‘স্যার, এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে আমাদের রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের প্রতি বেইনসাফি করা হবে। ’
বিমানের ভাড়া কমেছে উল্লেখ করে আজকের স্ট্যাটাসে হাসনাত লেখেন,
১. প্রায় ৫৮ হাজার টাকা (৪৮০ মার্কিন ডলার) থেকে ভাড়া কমে বর্তমানে ঢাকা-জেদ্দা, ঢাকা-রিয়াদ, ঢাকা-দাম্মাম, ঢাকা-মদিনা রুটে ভাড়া প্রায় ৪৩ হাজার ৫০০ টাকা (৩৬০ মার্কিন ডলার) হয়েছে। অর্থাৎ, ভাড়া কমেছে প্রায় ১৪ হাজার ৫০০ টাকা।
২. প্রায় ২১ হাজার টাকা (১৭৫ মার্কিন ডলার) থেকে ভাড়া কমে বর্তমানে ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুটে ভাড়া প্রায় ১৮ হাজার টাকা (১৫০ মার্কিন ডলার) হয়েছে। অর্থাৎ ভাড়া কমেছে প্রায় তিন হাজার টাকা।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সৌদি আরব ও মালয়েশিয়ায় যেতে সম্মানিত প্রবাসী কর্মীদের জন্য ভাড়ায় বিশেষ ছাড় প্রদান করা হয়েছে। ‘ওয়ার্কার ফেয়ার’ নামের এই সুবিধা ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে চালু হয়েছে এবং আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত প্রযোজ্য থাকবে। এই ভাড়া শুধু নতুন কর্মী ভিসা এবং একক যাত্রা টিকিটের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। ঢাকা থেকে সৌদি আরবের বিভিন্ন রুটে বর্তমানে মূল ভাড়া (কর বাদে) ৩৬০ মার্কিন ডলার, যা পূর্বে ঢাকা-জেদ্দা রুটে ৪৮০, ঢাকা-রিয়াদ রুটে ৪০০, ঢাকা-মদিনা রুটে ৪৩০ এবং ঢাকা-দাম্মাম রুটে ৪০০ মার্কিন ডলার ছিল। এছাড়া ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুটের বর্তমান ভাড়া ১৫০ মার্কিন ডলার, যা পূর্বে ছিল ১৭৫ মার্কিন ডলার।
‘ওয়ার্কার ফেয়ার’ নামের এই সুবিধা পেতে সম্মানিত যাত্রীদের বিএমইটি (BMET) ক্লিয়ারেন্স কার্ড অথবা বিএমইটি (BMET) সত্যায়িত ভিসা থাকতে হবে।
এখানে উল্লেখযোগ্য যে, ওমরাহ, ফ্যামিলি ভিজিট অথবা রেসিডেন্স ভিসাধারীরা এই বিশেষ ছাড় পাবেন না।
এই ভাড়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের যেকোনো বিক্রয়কেন্দ্র অথবা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স মনোনীত যেকোনো ট্রাভেল এজেন্সি থেকে টিকিট ক্রয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
দুদিন আগে এক পোস্টে হাসনাত আবদুল্লাহ লিখেছিলেন, ‘প্রতিদিন শত-শত রেমিট্যান্স যোদ্ধা আমাদের ইনবক্সে তাদের দুঃখ কষ্টের কথা জানান। অসংখ্য ভাই নিচের অভিযোগগুলো মেসেজটি বারবার করে পাঠাচ্ছেন। প্রবাসীদের বিষয়গুলো দ্রুত সময়ে অ্যাড্রেস করুন।’
প্রবাসীদের নিয়ে কয়েকটি এজেন্সির সিন্ডিকেট দ্বারা ভয়াবহ জালিয়াতি। বিষয়গুলো পয়েন্ট আকারে তুলে ধরছি-
১. সৌদি রুটে গ্রুপ টিকিটের দাম বেড়েছে : আগে যেখানে গ্রুপ টিকিটের মূল্য ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা ছিল। এখন সিন্ডিকেট করে প্রতিটি টিকিট ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
২. ফ্লাইট সংখ্যা হ্রাস : আগে প্রতি সপ্তাহে ৯৮টি ফ্লাইট চলত কিন্তু এখন তা কমিয়ে মাত্র ৪৪টি করা হয়েছে।
৩. সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি : কিছু এজেন্সি আগাম বিনিয়োগ করে চার থেকে পাঁচটি এজেন্সির মাধ্যমে গ্রুপ টিকিট কৃত্রিম সংকটে রেখেছে। দ্রুত এই সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া জরুরি।
৪. ব্ল্যাঙ্ক সিট বুকিং দেখিয়ে সংকট আরও বৃদ্ধি : ফ্লাইটগুলোতে খালি সিট থাকা সত্ত্বেও, ব্ল্যাঙ্ক সিট দেখিয়ে সংকট সৃষ্টি করা হচ্ছে।
৫. এয়ারপোর্টে যাত্রী হয়রানি : বিভিন্ন অজুহাতে যাত্রীদের হয়রানি করে তাদের ফ্লাইট মিস করানো হচ্ছে, এরপর অন্য যাত্রী কন্ট্রাক্টে উঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে প্রতি কন্ট্রাক্ট এত থেকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে।
৬. ম্যানপাওয়ার ভিসা সংক্রান্ত দুর্নীতি : ম্যানপাওয়ার ভিসা অ্যাটেস্টেডের নামে BMET বন্ধ রেখেছে অথচ সৌদি-বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করলে কনস্যুলার জানান তারা এ বিষয়ে অবগত নন।
৭. অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হচ্ছে : কিছু এজেন্সি এবং BME এর কিছু অসাধু কর্মকর্তা যোগসাজশে প্রতি ম্যানপাওয়ার ভিসার জন্য ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা বেশি নিচ্ছে। এই চক্র প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রবাসীদের স্বার্থে দ্রুত সময়ে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলেও ফেসবুক স্ট্যাটাসে হাসনাত আবদুল্লাহ উল্লেখ করেছিলেন।