সাগরে নিখোঁজ বিজিবি সদস্যের মরদেহ উদ্ধার

রোহিঙ্গা নাগরিকবাহী নৌকা উদ্ধারে গিয়ে সাগরে নিখোঁজ বিজিবি সিপাহী মো. বিল্লাল হাসান মুরাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ রোববার (২৩ মার্চ) বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে বঙ্গোপসাগর টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ গোলারচর এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বিল্লাল হাসান মুরাদ নগর উপজেলার কাজিরতলা গ্রামের বজলুর রহমানের ছেলে। শাহপরীর দ্বীপ বিজিবি সীমান্ত ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন তিনি।
এর আগে গত শুক্রবার (২১ মার্চ) গভীর রাতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় কক্সবাজারের টেকনাফে সমুদ্রে ডুবে যায় রোহিঙ্গাদের বহনকারী নৌকা। এ ঘটনায় নারী-শিশুসহ ২৫ জনকে জীবিত উদ্ধার হয়। সে সময় বিজিবির সদস্যসহ আরও বেশ কিছু রোহিঙ্গা নাগরিক নিখোঁজ হন। গতকাল শনিবার (২২ মার্চ) এক শিশুসহ চার রোহিঙ্গা নাগরিকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বিজিবি সদস্যের মরদেহ নিয়ে এ পর্যন্ত পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার হলো।
এ বিষয়ে টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশিকুর রহমান বলেন, নিখোঁজের দুদিন পর সাগর থেকে বিজিবি সদস্যের মরদেহ পাওয়া গেছে। এর আগে সমুদ্রে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টাকালে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিম পাড়ায় রোহিঙ্গা নাগরিক বহনকারী নৌকায় উদ্ধার অভিযানে যান ওই বিজিবি সদস্য। এসময় নৌকাডুবির ঘটনায় সমুদ্রে নিখোঁজ হন তিনি।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশিকুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার দিন খবর পেয়ে বিজিবি সদস্যরা স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় উদ্ধার অভিযানে যান এবং শিশুসহ ২৫ জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন। আমাদের উদ্ধার অভিযান চলছে।’
বিজিবি সিপাহী মো. বিল্লাল হাসানের ভাই আবু বকর বলেন, ‘ভাইকে খোঁজার জন্য তিনি টেকনাফের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন। এর মধ্যে খবর আসে সাগরে চরের মধ্যে মরদেহ পাওয়া গেছে। গত শুক্রবার সাগরে রোহিঙ্গা বহনকারী নৌকা উদ্ধার অভিযানে গেলে নিখোঁজ হন ভাই। ওই সময় আমাদের জানানো হয়েছিল তিনিসহ ৩৩ জন নিখোঁজ। এ নিয়ে ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল।’
নিখোঁজ বিজিবির সদস্যর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে জানিয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘এর আগে রোহিঙ্গা নাগরিক বহনকারী নৌকাডুবির ঘটনায় শিশুসহ চার রোহিঙ্গার মরদেহ ভাসমান অবস্থায় পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আরও বেশ কিছু রোহিঙ্গা নাগরিক নিখোঁজ রয়েছে। তাদের বিষয়ে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।’
স্থানীয়রা জানান, গত শুক্রবার রাতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা নাগরিকবাহী একটি নৌকা টেকনাফে শাহপরীর দ্বীপ পশ্চিম পাড়া এলাকায় সাগরে ভাসতে দেখে বিজিবির সদস্যরা স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ আমিনের মালিকাধীন মাছ ধরার নৌকায় শাকের মাঝির নেতৃত্বে নৌকাটি থামানোর সংকেত দেন। পরে ওই নৌকাতে ওঠেন বিজিবি সদস্য। এ সময় উত্তাল সাগরের ঢেউয়ে নৌকাটি ডুবে যায়। তাদের চিৎকারে নারী-শিশুসহ ২৫ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে স্থানীয় জেলে ও বিজিবি। পরে নিখোঁজ বিজিবির সদস্যসহ রোহিঙ্গাদের সন্ধানে সাগরে তল্লাশি চালানো হয়। ডুবে যাওয়া নৌকায় অর্ধশতাধিক লোকজন ছিল বলে জানিয়েছেন উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গারা।