সংযোগ সড়কহীন সেতু, ভোগান্তিতে হাজারো মানুষ

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নের ছনকা এলাকার খালের ওপর নির্মিত সেতুটি এ অঞ্চলের মানুষের কোনো কাজেই আসছে না। সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় হাজারো মানুষ প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৬ সালে নির্মিত প্রায় ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের সেতুটির পাটাতন ও রেলিং ভেঙে গেছে বহু আগেই। সেতুটির দুপাশ কাত হয়ে পড়ায় কয়েক বছর আগেই যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
গতকাল শনিবার (১২ এপ্রিল) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সংযোগ সড়ক না থাকায় স্থানীয়রা নিজ উদ্যোগে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে অস্থায়ীভাবে চলাচলের ব্যবস্থা করেছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, বর্ষা মৌসুমে নদীর প্রবল স্রোতে বারবার মাটি ধসে পড়ে এবং সেতুর নিচ থেকে অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের কারণে সেতুর পিলারের নিচের মাটি সরে যাওয়ার ফলে সেতুটি আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সেতুটি দিয়ে ১০টি গ্রামের প্রায় ১২ হাজার মানুষ চলাচল করতেন। বিকল্প কোনো রাস্তা না থাকায় এখন তাদের পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে। কৃষকদের উৎপাদিত ফসল বাজারে নিতে ঘুরে যেতে হচ্ছে দীর্ঘ পথ। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাওয়া-আসাও হয়ে পড়েছে কষ্টসাধ্য।
স্থানীয় বাসিন্দা আরফান আলী বলেন, প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই সেতু পার হতে হয়। আগে ছনকা বাজারে যেতে ১০ মিনিট লাগত, এখন ঘুরে যেতে লাগে এক ঘণ্টারও বেশি সময়।
আরেক বাসিন্দা আবু জাফর বলেন, প্রতিবছর স্থানীয়ভাবে ১০-১৫ হাজার টাকা খরচ করে বাঁশের সাঁকো তৈরি করি। বর্ষায় দুর্ভোগ আরও বাড়ে। প্রশাসনের কাছে বহুবার বললেও সাড়া মেলেনি।
বরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুল মজিদ বলেন, সেতুটি এতটাই ঝুঁকিপূর্ণ যে, পার্শ্ববর্তী কবরস্থানে মৃতদেহ নেওয়াও দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। দ্রুত নতুন সেতু নির্মাণ করা না হলে জনদুর্ভোগ বাড়তেই থাকবে।
সাটুরিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা খলিলুর রহমান মোল্লা বলেন, সেতুটির অবস্থার বিষয়ে আগে জানতাম না। দ্রুত সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এলাকাবাসীর দাবি, অতিদ্রুত নতুন একটি সেতু নির্মাণ করে চলাচলের নিরাপদ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হোক, যাতে দীর্ঘদিনের দুর্ভোগের অবসান ঘটে।