গালে ‘শুভ নববর্ষ’, কিনছে মুক্তার মালা

বাংলা বর্ষপঞ্জিতে শুরু ১৪৩২ সনের দিনগণনা। প্রতি বছরের মতো এবারও রমনার বটমূলে সুরে সুরে বরণ করা হলো বাংলা নববর্ষ। সবাই মিলে গাইলেন আঁধার রজনী পোহানোর গান।
পুরোনো বছরের দুঃখ-বেদনা, ভুল-ভ্রান্তি পেছনে ফেলে আজ সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল সোয়া ছয়টায় শুরু হওয়া অসাম্প্রদায়িক এই উৎসবে অংশ নেন ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, ধনী, দরিদ্র নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। সূর্যোদয়ের পরই আনন্দ-উল্লাসে উৎসবমুখর হয়ে ওঠে রমনা ও আশপাশের প্রান্তর। এরইমধ্যে শিশু-কিশোরদের গালে অঙ্কিত হলো ‘শুভ নববর্ষ’। আবার কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় কাটান অনেকে। কিনেন মুক্তার মালা, চুড়ি ও খেলনা। অনেকেই প্রাণবন্ত গল্প-হাসিতে মেতে উঠেন, খান পছন্দের মজার মজার সব খাবার। সবকিছুই যেন আনন্দের মাত্রাকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
ফজর নামাজের পর থেকেই রমনার বটমূলসহ আশপাশে সব বয়সী মানুষের আগমন শুরু হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই সংখ্যা বাড়তে থাকে। এক সময় রমনার বটমূল ও তার আশপাশ কানায় কানায় ভরে ওঠে। সবাই উৎসবে মেতে উঠেন পরিবার, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজন ও প্রিয়জনকে নিয়ে।
রমনায় বর্ষবরণে এসেছেন ব্যবসায়ী সাব্বির আহমেদ। তিনি বলেন, ব্যস্ত থাকায় পরিবারকে সময় দিতে পারি না। আজ স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে সকাল ৭টায় রমনায় এসেছি। অনেকে ঘুরেছি। রমনা থেকে স্ত্রীর জন্য চায়না মুক্তার মালা ও চুড়ি কিনেছি। মেয়ের গালে আঁকা হলো ‘শুভ নববর্ষ’। মেয়ে খুব খুশি। ওর খুশিতে আমিও খুশি।
কথা হয় চাকুরীজীবী নাসরীন সুলতানার সঙ্গে। তিনি বলেন, ভিড়ের কারণে নববর্ষে রমনায় সাধারণত আসা হয় না। এবার ছেলের জোরাজুরিতে এসেছি। এসে খুব ভালো লাগছে। কোনো ভিড় নেই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও আন্তরিক দেখছি। ছেলের জন্য কিনেছি বিভিন্ন খেলনা।

পরিচ্ছন্ন ও ঢিলেঢালা পরিবেশে এবারের রমনার নববর্ষ আয়োজন— এমনটা জানিয়ে নাজির হোসেন বলেন, রমনার ভেতরের রেস্তোরাঁয় পান্তা ইলিশ খাওয়া ব্যবস্থা আছে। কিন্তু দাম অনেক বেশি। যা কমানো খুবই জরুরি। তিনি বলেন, আমি সকাল সাড়ে ৭টায় এসেছি। শুনেছি ছায়ানটের আয়োজনের গান।
কথা হয় স্কুলশিক্ষিকা আবিদা কুসুমের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমার স্কুলেও বর্ষবরণ অনুষ্ঠান হচ্ছে। কিন্তু আমার ছেলে ও মেয়ে অনেকদিন ধরে বলছিল, পহেলা বৈশাখে রমনায় আসবে। তাদের কান্না থামানোর জন্য আমার এখানে আসা। এখানে এসে ওরা গালে ‘শুভ নববর্ষ’ ও একতারা এঁকেছে। খেয়েছে পছন্দের খাবার। কিনেছি খেলনা।
রমনায় দর কষাকষি করে মালা, চুড়ি ও ব্রেসলেট কিনেছেন মরিয়ম। তিনি বলেন, মেয়ের জন্য একটি মালা ও চুড়ি কিনেছি। আমার জন্য খুঁজছি। এখানে ভালো কিছু পেয়েছি।