পাবনায় যমুনার ভাঙনে দিশেহারা নদীপাড়ের বাসিন্দারা

পাবনার বেড়ায় অসময়ে যমুনা নদীতে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত দুই মাস ধরে এই ভাঙন অব্যাহত থাকায় দুশ্চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা। হুমকির মুখে পড়েছে কবরস্থান, মসজিদ, মাদ্রাসাসহ অসংখ্য ঘরবাড়ি ও কৃষিজমি। স্থানীয়দের অভিযোগ, বালুখেকোরা ড্রেজার দিয়ে নদীর তলদেশ থেকে বালু তোলায় অসময়ে ভাঙছে যমুনা। ইতোমধ্যে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
পাবনার বেড়া উপজেলার নতুন ভারেঙ্গা ইউনিয়নের নেওলাইপাড়া গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া যমুনা নদীতে চরাঞ্চলের কয়েকটি গ্রামে এবার অসময়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। শুধু নেওলাইপাড়া গ্রামই নয়, পার্শ্ববর্তী নতুন বাটিয়াখড়া, পায়না, রাকসা, গণপতদিয়া, মধুপুর ও মরিচাপাড়া গ্রামেরও একই চিত্র।
যমুনা নদীর তীরবর্তী এই কয়েকটি গ্রামে প্রায় দুই হাজার পরিবারের বসবাস। গত দুই বছরে প্রায় পাঁচশ পরিবার বসতভিটা হারিয়েছে। নদীতে বিলীন হয়েছে প্রায় এক হাজার বিঘা জমি। এ বছর বর্ষা মৌসুমের অনেক আগেই অসময়ে ভাঙন দেখা দেওয়ায় দুশ্চিন্তা বাড়ছে।
গত দুই মাস ধরে অব্যাহত থাকা যমুনা নদীর ভাঙনে তীব্র স্রোতের কারণে গতিপথ পরিবর্তন হওয়ায় ভাঙছে নতুন নতুন চর। এতে দুশ্চিন্তায় দিশেহারা নদীপাড়ের বাসিন্দারা বলছেন, ধীরে ধীরে ভাঙন এগিয়ে যাচ্ছে তাদের বসতবাড়ির দিকে। হুমকির মুখে পড়েছে মসজিদ, মাদ্রাসা ও কবরস্থান।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, অসাধু চক্র ড্রেজার দিয়ে নদীর তলদেশ থেকে অবৈধভাবে বালু তোলায় যমুনা নদীর ভাঙন শুরু হয়েছে। অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ ও ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
ইতোমধ্যে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। তারা জানান, ভাঙন রোধে প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এবং বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু হবে।
পাউবো, বেড়া, পাবনার উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মো. হায়দার আলী বলেন, নদী ভাঙন প্রতি বছরের একই চিত্র। জিও ব্যাগ ফেলে কতবার আর ভাঙন রোধ করা সম্ভব। তাই নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করা গেলে অনেকটাই কমে আসবে নদী ভাঙন-এমনটাই মত নাগরিক সমাজের।