ফেসবুকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রশ্ন ফাঁস, পরীক্ষা স্থগিত

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় ১৮৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির প্রথম সাময়িক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে ফাঁস করেছেন এক শিক্ষক। তাঁর এমন কাণ্ডে জেলায় আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে।
অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের শাস্তির দাবি জানিয়েছে সচেতন মহল। পরীক্ষা স্থগিত করে ঘটনা তদন্তে গঠিত হয়েছে ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি।
জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার (৬ মে) উপজেলার রাধাগঞ্জ ইউনিয়নের ১৭২নং খাগবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মানদা চাঁদ উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে ইংরেজি বিষয়ে চতুর্থ শ্রেণির প্রথম সাময়িক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নিয়ে তার অফিসের টেবিলে রাখেন। এই প্রশ্ন দেখার কথা বলে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রঞ্জিত কুমার ঘোষ মোবাইল ফোনে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দেন। এই পোস্ট মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়।
উপজেলার কান্দি গ্রামের সমাজসেবক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষক রঞ্জিত কুমার ঘোষ মোবাইল ফোনে প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। এই প্রশ্ন ছড়িয়ে পড়েছে। প্রশ্নের মতো একটি গুরুপ্তপূর্ণ বিষয় নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া তার মোটেও ঠিক হয়নি।’ তদন্তপূর্বক ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া দাবি জানান তিনি।
১৭২নং খাগবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মানদা চাঁদ বলেন, গতকাল মঙ্গলবার উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে ইংরেজি বিষয়ে চতুর্থ শ্রেণির প্রথম সাময়িক পরীক্ষার প্রশ্ন নিয়ে আমার অফিসের টেবিলে রাখি। সেখান থেকে প্রশ্নপত্র দেখার কথা বলে আমার অজান্তে সহকারী শিক্ষক রঞ্জিত কুমার ঘোষ মোবাইল ফোনে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দেন। আজ বুধবার (৭ মে) যথারীতি পরীক্ষা শুরু হয়। এরপর অনেকে ফেসবুকে প্রশ্ন দেখে আমাকে জানায়। আমি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
সহকারী শিক্ষক রঞ্জিত কুমার ঘোষ বলেন, মোবাইল ফোনে প্রশ্নের ছবি তোলার পর ভুলবশত এটি আমার ফেসবুক আইডিতে পোস্ট হয়ে যায়। বিষয়টি আমি জানার পর ফেসবুক থেকে প্রশ্নপত্রটি ডিলিট করে দিয়েছি।
কোটলীপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন ভক্ত বলেন, ফাঁস হওয়া প্রশ্নে উপেজলার প্রায় সাড়ে তিন হাজার চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছে। ফেসবুকে প্রশ্ন পোস্ট করার বিষয়টি জানার পর চতুর্থ শ্রেণির ইংরেজি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে সহকারী সিনিয়র উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হিমাংশু বিশ্বাসকে আহ্বায়ক করে ছয় সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। ১৫ মে পরীক্ষা শেষে এই স্থগিত ইংরেজি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ছাপিয়ে পুনরায় পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করা হবে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আরও বলেন, এ বিষয়ে আমি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছেন।