রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ সব সমস্যার সমাধান নয় : গয়েশ্বর

রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ সব সমস্যার সমাধান নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
আজ শনিবার (১০ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ১২ দলীয় জোট আয়োজিত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণ ও সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ সব সমস্যার সমাধান নয়। সমস্যা মনমানসিকতার। পাকিস্তান সৃষ্টির মূল কারিগর ছিল মুসলিম লীগ। আজকে তাদের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না। জাসদও বড়দল ছিল। আজ কয়েকভাগে বিভক্ত। ভাসানী-কাজী জাফরের নেতৃত্বাধীন ইউপিপিও বিলীন হয়ে গেছে। জনগণের বিরুদ্ধে যারা অবস্থান নেয়, তারা এমনিতেই বিলীন হয়ে যায়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আইনের শাসন নিশ্চিতের মাধ্যমে জনগণই ঠিক করে কারা গ্রহণযোগ্য বা কারা জনগণ কর্তৃক নিষিদ্ধ। কালকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে দিলেন, পরশুদিন যে বিএনপিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করবেন না, তার গ্যারান্টি কী? আওয়ামী লীগ যদি দেশ ও গণতন্ত্রের জন্য পয়জন হয়, মানুষ যদি মনে করে আওয়ামী লীগ দেশের জন্য, গণতন্ত্রের পয়জন; তাহলে জনগণই তাদের নিষিদ্ধ করে দেবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, জামায়াত এখনও নিষিদ্ধ দল। এখনো তারা নিবন্ধন ফিরে পায়নি। তারপরও তাদের গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। এই জামায়াত কীভাবে নিষিদ্ধ হয়েছিল? আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে হবে তা দাবি করতে হবে কেন? আজকে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কলকাঠি কারা নাড়াচ্ছেন? যারা এদেশে ১/১১ এনেছিল, তারাই অদৃশ্যভাবে এ সরকার চালাচ্ছে।
সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের দেশত্যাগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হামিদ চলে গেলেন। রাষ্ট্রের দুইবার প্রেসিডেন্ট। কোনো সংস্থা জানে না তিনি যাচ্ছেন। যখন ইমিগ্রেশন ক্রস করলেন সরকার তা জানে না, এটি বিশ্বাসযোগ্য নয়। সরকারের সম্মতি ছাড়া তিনি বাইরে যেতে পারেন না। আসলে সরকার কয়টা? আছে ইউনূস সরকার, ছাত্রদের সরকার।
তিনি বলেন, ‘আজকে আরাকান নিয়ে জনগণ ফুঁসে উঠায় চুপ হয়ে আছে। সরকার কিন্তু এখনো একবারও বলেনি আমরা এগুলো করছি।’
তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তন প্রসঙ্গে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘তারেক রহমানের দেশে ফিরতে বাধা নেই এটি আমরা সরকারের কাছ থেকে শুনতে চাই। আপনারাতো বিদেশ থেকে এনে কাউকে কাউকে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বও দিয়েছেন। তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিরাপত্তা মূল কারণ নয়। মূল কারণ আমাদের জ্ঞাত হতে হবে।’
‘যে মানুষটি বিদেশে বসেও দেশকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য কাজ করেছেন আজকে তার স্বদেশ ফিরতে বাঁধা কোথায় জাতি তা জানতে চায়।’
১২ দলীয় জোট প্রধান এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন-জোটের মুখপাত্র ও বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়াতে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাতীয় পার্টির মহাসচিব সাবেক এমপি আহসান হাবিব লিংকন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ, লেবার পার্টি বাংলাদেশের মহাসচিব আমিনুল ইসলাম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপার) সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, ইসলামী ঐক্য জোটের মহাসচিব আব্দুল করিম নয়া গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এম এ মান্নান প্রগতিশীল জাতীয়তাবাদী দল পিএনপির চেয়ারম্যান ফিরোজ মুহাম্মদ লিটন, কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আবু হানিফ, জমিয়াতে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি জাকির হোসেন, গণতান্ত্রিক পার্টির মহাসচিব ইমরুল কায়েস ও কৃষকদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম।