সুনামগঞ্জে দুদকের গণশুনানি অনুষ্ঠিত

‘আসুন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ হই’ স্লোগানকে সামনে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আয়োজনে জেলা প্রশাসন ও জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সহযোগিতায় গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ সোমবার (১৯ মে) সুনামগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমির হাছন রাজা মিলনায়তনে দুদকের ১৭৬তম এই গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন দুদক কমিশনার (অনুসন্ধান) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাফিজ আহ্সান ফরিদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুদক কমিশনার বলেন, দুর্নীতি একটা ব্যাধি নয়, শোষণের হাতিয়ার। দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধে দুদক অনুঘটক হতে পারে। এ যুদ্ধে জয়লাভ দুদকের একার পক্ষে সম্ভব নয়, সব জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে।
দুদক কমিশনার আরও বলেন, ঘুষখোররা পরিবার ও সমাজে ঘৃণিত। এদের কোনো সম্মানবোধ নেই।
‘২০২৪ এ ছাত্র-জনতা গোটা জাতিকে প্রতিবাদী হতে শিখিয়েছে’ উল্লেখ করে দুদক কমিশনার সবাইকে অনুরোধ করে বলেন, ‘আপনারা প্রতিবাদী হোন, ঘুষ দিবেন না, দুদকের টোল ফ্রি হট লাইন ১০৬ এ ফোন দিয়ে আপনার অভিযোগ জানান। চিৎকার করে লোকজন ডাকবেন, ভিডিও করবেন তাহলে প্রতিষ্ঠানিক দুর্নীতি কমতে বাধ্য। সব জনগণ সচেতন হোন। দেখবেন আগামী এক বছর পর সুনামগঞ্জ ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত জেলা হবে।’
জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়ার সভাপতিত্বে গণশুনানিতে দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আকতার হোসেন, পুলিশ সুপার তোফায়েল আহম্মেদ এবং দুদক সমন্বিত সিলেট জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক রাফী মো. নাজমুস সাদাত বক্তব্য দেন। বক্তারা ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দুর্নীতি-বৈষম্যমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় সবাইকে সজাগ হওয়ার আহ্বান জানান।
আজকের গণশুনানিতে ১৮টি সরকারি দপ্তরের বিরুদ্ধে মোট ৪৫টি অভিযোগের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে শাল্লা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সরকারি চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী অসদাচরণ এবং তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের প্রাথমিক অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয় এবং তাঁর অসদাচরণের কারণে স্থায়ী বরখাস্তের জন্য শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিরুদ্ধে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণ করাসহ বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে এবং সদর উপজেলায় মুজিব বর্ষের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণে পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। ছয়টি অভিযোগের তাৎক্ষণিক সমাধান দেওয়া হয়। এ ছাড়া অন্য অভিযোগের বিষয়গুলো তিন থেকে সাত দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের সমাধান করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।