ঈদে রাজধানীর নিরাপত্তায় ৫০০ পেট্রোল টিম : ডিএমপি

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, একটি ঈদ জামাতও নিরাপত্তার বাইরে থাকবে না। ঈদের ছুটিতে রাতের ঢাকার নিরাপত্তায় ৫০০টি ও দিনে ২৫০টি পেট্রোল টিম থাকবে। পাশাপাশি গাড়ি, ফুট পেট্রোল ও মোবাইল পেট্রোল থাকবে। আশা করি কোনো সমস্যা হবে না। এছাড়া সড়কে চেকপোস্ট তল্লাশি থাকবে।
আজ শুক্রবার (৬ জুন) সকালে জাতীয় ঈদগাহের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে ডিএমপি কমিশনার এসব কথা বলেন।
রাজধানীবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাত শুরু হবে সকাল সাড়ে ৭টায়। এখানে একত্রে ৩৫ হাজার মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করতে পারবেন। প্রধান উপদেষ্টা, প্রধান বিচারপতিসহ অন্যান্য বিচারপতি, উপদেষ্টা, ঢাকার মুসলিম দেশের কূটনীতিক ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করবেন। ঈদগাহে ৪টি পুরুষ ও ১টি নারী গেটসহ মোট ৫টি গেট দিয়ে মুসল্লিরা ঈদ জামাতে প্রবেশ করতে পারবেন।
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের ঈদ জামাতের ব্যাপারে ডিএমপি কমিশনার বলেন, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মোট ৫টি ঈদ জামাত হবে। তারমধ্যে প্রথম জামাত শুরু হবে সকাল ৭টায়। আবহাওয়া প্রতিকূল থাকলে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের প্রধান জামাত বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে সকাল ৮টায় শুরু হবে।
শেখ মো. সাজ্জাত আলী আরও বলেন, এ বছর ঢাকা মহানগরীতে মোট ১১৮টি ঈদগাহ এবং ১৬২১টি মসজিদে ঈদের জামাত হবে। এছাড়াও মহানগরীতে শিয়া ও কাদিয়ানি সম্প্রদায় কর্তৃক ৮টি এবং সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে ৩টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, জাতীয় ঈদগাহ, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ এবং ঢাকার অন্যান্য স্থানে অনুষ্ঠিতব্য ঈদ জামাতের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ একটি সমন্বিত, সুদৃঢ় ও নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামাত উপলক্ষ্যে পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জাতীয় ঈদগাহ ময়দান ও আশপাশের এলাকায় ইতোমধ্যেই সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে এবং ঈদগাহ ময়দানে স্থাপিত অস্থায়ী পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ঈদগাহ ময়দানে আসার প্রধান তিনটি রাস্তার প্রবেশ মুখে অর্থাৎ মৎস্য ভবন ক্রসিং, প্রেস ক্লাবের সামনে ও হাইকোর্ট ক্রসিংয়ে ব্যারিকেড ও তল্লাশির ব্যবস্থা থাকবে। ঈদগাহ ময়দানে প্রবেশপথ সমূহে আর্চওয়ের মাধ্যমে সব মুসল্লিকে প্রবেশ করতে হবে। এছাড়াও মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে ও ম্যানুয়ালি তল্লাশির ব্যবস্থা থাকবে। নারীদের জন্য পৃথক নামাজের ব্যবস্থা, প্রবেশপথ এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। ঈদগাহ ময়দান ও আশপাশের এলাকা এসবির সুইপিং টিম এবং সিটিটিসির ডগ স্কোয়াড দ্বারা সুইপিং করা হবে। ডিএমপির সোয়াট ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবে। ডিবি ও সিটিটিসির পর্যাপ্ত সংখ্যক সদস্য সাদা পোশাকে মোতায়েন থাকবে এবং পুরো এলাকায় আলাদা নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হবে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য ইতোমধ্যেই ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে। নিরাপত্তা প্রদানে নিয়োজিত অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে সার্বক্ষণিক সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম কেন্দ্রিক একই ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। অন্যান্য ঈদগাহের ক্ষেত্রে ডিএমপির প্রতিটি ক্রাইম বিভাগ আয়োজক সংস্থার সাথে সমন্বয় করে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। মহানগরীর একটি ঈদ জামাতও নিরাপত্তা ব্যবস্থার বাইরে থাকবে না।
নগরবাসীর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে তল্লাশি কার্যক্রমে সহযোগিতা করার জন্য নগরবাসীকে অনুরোধ করছি। ঈদ জামাতে কোনো প্রকার ব্যাগ, ধারালো বস্তু বা দাহ্য পদার্থ সঙ্গে না আনার জন্য অনুরোধ করছি। ঈদ জামাত শেষে তাড়াহুড়ো না করে সুশৃঙ্খলভাবে বের হবেন। সন্দেহজনক কিছু মনে হলে অনতিবিলম্বে নিকটস্থ পুলিশ সদস্যকে জানাবেন।
এ সময় তিনি নগরবাসীকে ঈদের ছুটির সময় মহানগরীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে নগরবাসীর সহায়তা প্রত্যাশা করে ডিএমপির পক্ষ থেকে যেসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সেগুলো মেনে চলারও আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি কোরবানির পশুর বর্জ্য সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা ও যেকোনো সহায়তায় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এবং পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করার আহ্বান জানিয়েছেন।