ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় সালিশ বৈঠকে বিচারপ্রার্থীর ওপর হামলা, আহত ২০

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় সালিশ বৈঠকে বিচার প্রার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। এ হামলায় নারীসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। রোববার (৮ জুন) বিকেলে উপজেলার শুয়াগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রাতে শুয়াগ্রামের খগেন মধুর ছেলে রিপন মধু (২৫) সহ আরেও এক যুবক পাশের একটি বাড়িতে ঢুকে এক গৃহবধূকে (১৯) ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় ওই গৃহবধূর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে রিপন মধু ও তার সঙ্গী পালিয়ে যায়। পরের দিন সকাল বেলা ওই গৃহবধূর স্বামী বাড়িতে এলে এ ঘটনা তার স্বামীকে জানায়। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হওয়ার পর ওই গৃহবধূর স্বামী থানায় মামলা করার উদ্যোগ নিলে রিপন মধুর কাকা স্থানীয় ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগনেতা অমল মধু সামাজিকভাবে বিচার দেওয়ার আশ্বাস দেন।
রোববার বিকেলে এ ঘটনায় শুয়াগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ, তার স্বামী ও স্বজনদের নিয়ে ইউপি সদস্য অমল মধু সালিশ বৈঠকে বসেন। সালিশ বৈঠকে দুই পক্ষের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে অমল মধুর ভাতিজা রিপন মধু ও যুবলীগ নেতা রাজিবুল বিশ্বাস লোকজন নিয়ে ওই গৃহবধূ, তার স্বামী ও স্বজনদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।
এই হামলায় কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়। গুরুতর আহত ওই গৃহবধূ, তার স্বামী, স্বজন ওসমান শেখ (২৬), ইয়াদুল শেখ (২২), হাসিবুল শেখ (২৮), আলী শেখ (১৮) ও হাকিম আলী শেখ (২৫) কে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। আহত বাকিরা বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছে।
ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূর স্বামী বলেন, আমি একটি মাদ্রাসায় নৈশপ্রহরীর চাকরি করি। গত বৃহস্পতিবার রাতে আমি ডিউটিতে গেলে রিপন মধু তার এক সঙ্গীকে নিয়ে আমার ঘরের টিনের বেড়া কেটে ঘরে প্রবেশ করে। এসময় আমার স্ত্রীকে ঘরে একা পেয়ে রিপন ও তার সঙ্গী ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এ সময় তার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এলে রিপন ও তার সঙ্গী পালিয়ে যায়। এ ঘটনার পর আমি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিলে রিপনের কাকা ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগনেতা অমল মধু আমাকে সামাজিকভাবে বিচার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। আজ বিকেলে বিচার সালিশিতে বসলে অমল মধুর ভাতিজা রিপন ও যুবলীগ নেতা রাজিবুল বিশ্বাস দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়।
এ বিষয়ে জানার জন্য অমল মধুর বাড়িতে গিয়ে অমল মধু, তার ভাতিজা রিপন মধু ও রাজিবুল বিশ্বাসকে পাওয়া যায়নি। এই ৩ জনের মোবাইলফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।
কোটালীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।