আ.লীগের ভুলের কারণেই আজকের এই পরিণতি : আবদুল হামিদ

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট দেশ ছাড়েন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই রীতিমতো ভেঙে পড়তে থাকে দলটির সাংগঠনিক কাঠামো। নানা ঘটনা পরিক্রমায় অন্তর্বর্তী সরকার দেশের স্বাধীনতায় নেতৃত্ব দেওয়া সবচেয়ে পুরোনো ও ঐতিহ্যবাহী দলটির কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে। কিন্তু এমন বিপর্যয় কেন নেমে এলো দলটির? এনিয়ে দেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের ভুল ছিল এবং এই ভুলেরই শাস্তি পাচ্ছে দলটি।’
সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের শ্যালক ডা. আনম নওশাদ খান গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দেশের একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান।
ডা. আনম নওশাদ খান জানান, কাছের মানুষদের প্রায়ই আবদুল হামিদ বলেন, ‘গত ১৬ বছরে আমাদের অনেক ভুল ছিল। তা না হলে এমনটা কেন হলো? ভুল ছিল বলেই আজকের এই পরিণতি। আজকের অবস্থা হয়তো আমাদের ভুলেরই শাস্তি।’
সাবেক রাষ্ট্রপতি আক্ষেপ করে বলেন, ২০১২ সালে যখন স্পিকার ছিলাম তখনই বলেছি, সরকার স্বৈরাচারী হলে জনগণ বেশিদিন সায় দেবে না।
বর্তমানে কার্যত নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগকে আগামী দিনে রাজনীতি করতে হলে তাদের অতীতের ভুল শোধরাতে হবে বলেও মনে করেন সাবেক এই রাষ্ট্রপতি।
গত ৭ মে রাতে চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে যাওয়ার সময় সাবেক রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ছিলেন ডা. আনম নওশাদ খান। প্রায় এক মাস পর গত রোববার গভীর রাতে (রাত ১টা ২৫ মিনিটে) থাই এয়ারওয়েজের টিজি-৩৯৯ ফ্লাইটে তারা ফেরেন। ৮২ বছর বয়সি অসুস্থ ভগ্নীপতিকে কাছে থেকে দেখাশোনা করছেন তিনি।
ডা. আনম নওশাদ খান জানান, তিনি (আবদুল হামিদ) পুরোপুরি পারিবারিক আবহেই আছেন। রাজনৈতিক কোনো যোগাযোগ এখন নেই। সেই ধরনের শারীরিক অবস্থাও তার নেই।
আবদুল হামিদের বর্তমান শারীরিক অবস্থা খুব বেশি ভালো নয়। তিনি একা চলাফেরা করতে পারেন না। তার লাং ক্যানসার ‘থ্রি টু ফোর স্টেজ’-এর মাঝামাঝিতে রয়েছে। যেটাকে লাস্ট স্টেজ বলে জানান ডা. আনম নওশাদ খান।
ডাক্তার তিন মাস অপেক্ষা করতে বলেছেন জানিয়ে ডা. আনম নওশাদ খান বলেন, এরপর আবার তাকে যেতে হবে। তার বিদেশ যাত্রা নিয়ে দেশে নানা ধরনের আলোচনা চললেও তিনি নিজে দেশে ফেরার বিষয়ে অনড় ছিলেন। নওশাদ খান বলেন, ‘অনেকেই তাকে বলেছেন, আপনি দেশে ফিরবেন না। কিন্তু তিনি বলেছেন, না, আমি দেশে ফিরবই। যা হওয়ার হবে। দেশে ফিরে দেশের মাটিতেই না হয় মারা গেলাম। দেশেই তো আমার আত্মীয়স্বজন সবাই আছে।’
হাওড় এলাকায় আবদুল হামিদের জন্ম। ছাত্রজীবন থেকেই জড়িত ছিলেন রাজনীতিতে। সাতবারের এমপি ছিলেন তিনি। জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপর রাষ্ট্রপতির দায়িত্বে ছিলেন ১০ বছর ৪১ দিন।