৪০ লাখ টাকার যন্ত্রপাতি চুরি, অচল কুষ্টিয়া হাসপাতালের পিসিআর ল্যাব

কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের একমাত্র পিসিআর ল্যাব থেকে প্রায় ৪০ লাখ টাকার মূল্যবান যন্ত্রপাতি চুরির ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি ফের উদ্বেগজনক হয়ে ওঠায় ল্যাবটি দ্রুত চালুর দাবি জানিয়েছে সচেতন মহল।
২০২০ সালের ৯ মে দুই কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপিত এই আধুনিক ল্যাবটি কুষ্টিয়া ছাড়াও আশপাশের জেলার লাখো মানুষের করোনা শনাক্তকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। সংক্রমণ কমে যাওয়ায় এক বছর আগে ল্যাবটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর থেকে এটি ছিল কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের দুই টেকনোলজিস্টের তত্ত্বাবধানে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, মাসখানেক আগে তারা জানতে পারেন, ভবনের পেছনের জানালার গ্রিল কেটে একাধিক যন্ত্রপাতি- একটি পিসিআর মেশিন, পাঁচটি এসির আউটডোর, একটি ইনডোর, কম্পিউটার ও সিসিটিভি ক্যামেরা চুরি হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, গত চার-পাঁচ মাসে ধাপে ধাপে এসব চুরি হয়েছে।
পিসিআর ল্যাব ইনচার্জ ডা. নাজমীন রহমান জানান, অবশিষ্ট যন্ত্রাংশ কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। কীট ও জনবল সরবরাহ পেলে পুনরায় কোভিড পরীক্ষা শুরু করা সম্ভব।
চুরির ঘটনায় দায়িত্বরত দুই টেকনোলজিস্টকে শোকজ করা হয়েছে। তদন্তে তাদের গাফিলতির প্রমাণ মিলেছে বলে জানান হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. হোসেন ইমাম। পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ, কুষ্টিয়া জেলা শাখার সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট শামিমুল হাসান অপু বলেন, ঘটনার সঠিক তদন্ত ও দায়ীদের শাস্তির পাশাপাশি দ্রুত ল্যাব চালুর ব্যবস্থা নিতে হবে।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশাররফ হোসেন জানান, চুরির ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ এলেও তা অসম্পূর্ণ ছিল। প্রয়োজনীয় সংশোধনের পর আর কেউ যোগাযোগ করেনি।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের মার্চ থেকে কুষ্টিয়ায় কোভিডে মারা গেছেন ৮৫৫ জন এবং আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৪ হাজার মানুষ। সংক্রমণ পুনরায় বাড়লে এ ল্যাবটি চালু না থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।