হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগ জামায়াতনেতাদের বিরুদ্ধে

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে অবসরকালীন ভাতার ভুল কাগজে স্বাক্ষর না দেওয়ায় উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে। গতকাল মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুপুর ২টার দিকে উপজেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় মারধরে বাধা দিতে গিয়ে রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ক্যাশিয়ার রাজা মিয়াও লাঞ্ছিত হন।
সরেজমিনে গিয়ে অফিস সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা যায়, রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স আতোয়ারা খাতুনের স্বামী কাদের মোল্লা উপজেলার একজন পরিচিত জামায়াত কর্মী। মঙ্গলবার দুপুরে তিনি দলীয় বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে নিয়ে স্ত্রীর অবসরকালীন ভাতার বিল সংক্রান্ত কাগজপত্র নিয়ে উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে যান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা হায়দার আলী, সাবেক আমির মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, মাওলানা শহীদ মাসুদ, আনোয়ার হোসেন ও মিজানুর রহমানসহ ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতা।
আলোচনার একপর্যায়ে উত্তেজনা দেখা দিলে জামায়াতের রৌমারী সদর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড সভাপতি আনোয়ার হোসেনসহ আরও কয়েকজন নেতাকর্মী উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সাইদুজ্জামানকে মারধর করে। এ সময় তাকে বাঁচাতে গিয়ে লাঞ্ছনার শিকার হন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ক্যাশিয়ার রাজা মিয়াও।
ভুক্তভোগী ক্যাশিয়ার রাজা মিয়া বলেন, কোনো কিছু বোঝার আগেই তারা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কলার ধরে ফেলেন। আমি বাধা দিতে গেলে আমাকেও মারধর করে।
হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান বলেন, সিনিয়র স্টাফ নার্স আতোয়ারা খাতুনের অবসরকালীন ইনক্রিমেন্টের বিল অনুমোদনের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু কাগজে কিছু ভুল থাকায় স্বাক্ষর করিনি। তখন তারা দলবল নিয়ে এসে আমাকে মারধর করে।
হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তাকে মারধরের বিষয় জানতে চাইলে উপজেলা জামায়াতের আমির হায়দার আলী বলেন, নার্স আতোয়ারা খাতুনের স্বামী আমাদের দলের একজন কর্মী। তার স্ত্রীকে বিল দেওয়া হচ্ছিল না। আমাদের কয়েকজন নেতাকর্মী সেখানে যান, তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে হাতাহাতি হয়। পরে আমি বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উজ্জ্বল কুমার হালদার বলেন, আমি ছুটিতে আছি, বিষয়টি আগে জানতাম না। তবে খোঁজ নিচ্ছি, কি ঘটেছে তা যাচাই করে দেখা হবে।