চাঁপাইনবাবগঞ্জের চরাঞ্চলে ৮ হাজার পরিবার পানিবন্দি

ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেওয়ার পর ভারত থেকে নেমে আসা উজানের ঢল ও টানা বৃষ্টিতে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। জেলার সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার প্রায় ৯ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
এতে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ও শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এলাকার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং স্বাভাবিক জীবনযাত্রাও ব্যাহত হচ্ছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, গত ১৫ ঘণ্টার ব্যবধানে পদ্মায় পানি বেড়েছে ৫ সেন্টিমিটার। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল ১০টায় পদ্মায় পানি ২১.৭০ সেন্টিমিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হয়েছে, যা বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে।
সদর উপজেলা দুটি ও শিবগঞ্জ উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে মোট প্রায় ৮ হাজার পরিবার পানিবন্দী রয়েছেন। সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের ৭০০ এবং আলাতুলি ইউনিয়নের ৬০০ পরিবার, শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের ৩ হাজার পরিবার, উজিরপুর ইউনিয়নের ৪৫০ এবং দুর্লভপুর ইউনিয়নের ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দী।
ফসলি জমির ক্ষতির পরিমাণও উল্লেখযোগ্য। সদর উপজেলার ৪৩ হেক্টর এবং শিবগঞ্জ উপজেলার ৩৬০ হেক্টর জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আজাহার আলী জানান, উপজেলায় প্রায় সাড়ে ৭ হাজার মানুষ পানিবন্দী। পানি প্রবাহিত হওয়ায় বোগলাউড়ি পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার পাকা সড়কও আংশিকভাবে বন্ধ। পিঠালিতলা বিলে পানি প্রবেশ করায় কয়েক হাজার বিঘা জমির ফসল তলিয়ে গেছে। উদ্ধার ও শুকনো খাবার বিতরণ কাজ অব্যাহত রয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দী হয়েছেন। শিবগঞ্জ উপজেলার মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। তালিকা প্রস্তুত করে যাচাই-বাছাইয়ের পর তাদের ত্রাণ দেওয়া হবে। সোমবার (১১ আগস্ট) ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মধ্যে শুকনো খাবার ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে।