ডাকসুর ফলের প্রভাব জাতীয় নির্বাচনে পড়বে না : আসাদুজ্জামান রিপন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ফলের প্রভাব জাতীয় নির্বাচনে পড়বে না বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন। তিনি বলেন, ‘ডাকসু, জাকসু, চাকসু ও রাকসুর নির্বাচনের ফলাফল কোনোভাবেই জাতীয় নির্বাচনের ওপর পড়বে না। এ নির্বাচনে কোনো অনিয়মের সুযোগ দেওয়া হবে না।’
আজ বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপরে মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলায় নদী ভাঙন রোধে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন ড. আসাদুজ্জামান রিপন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচনে আগে যারা হারত, তারা শুধু অভিযোগ করত। এবার যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন এ টু জেড—সব প্যানেলই ভোট কারচুপির অভিযোগ করেছে। এমনকি, যারা জয়ী হয়েছে সেই ছাত্রশিবিরও এ ধরনের অভিযোগ করেছে।’
ড. আসাদুজ্জামান রিপন আরও বলেন, ‘ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, বামপন্থি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র—সবাই অভিযোগ করেছে। অভিযোগ করেনি এমন কোনো দল নেই। সুতরাং, যে নির্বাচন এতভাবে কালিমা লিপ্ত, এতভাবে অভিযুক্ত—এ নির্বাচনটাকে সবাই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। সুতরাং, নির্বাচনের ফলাফলটাও কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে গেছে।’
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ডাকসুর ফলাফলে কোনো প্রভাব পরবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ডাকসু, জাকসু, চাকসু, রাকসুর নির্বাচনের ফলাফলের প্রভাব কোনোভাবেই জাতীয় নির্বাচনের ওপর পড়বে না। জাতীয় নির্বাচনের কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। এ নির্বাচনে কোনো রকম অনিয়মের সুযোগ দেওয়া হবে না।’
সম্প্রতি বর্তমান সরকার জাপানে এক লাখ দক্ষ জনবল পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার জাপান সফরের সময় দেশটির সরকারের সঙ্গে চূড়ান্ত সমঝোতাও হয়েছে। মুন্সীগঞ্জ থেকে জনবল জাপানে পাঠানোর বিষয়ে ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ‘আমাদের মুন্সীগঞ্জের বহু মানুষ বিদেশে রয়েছেন। বিদেশ থেকে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স আয় হয়, তাঁর বড় একটি অংশ আমাদের মুন্সীগঞ্জের। প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি, এক লাখ মানুষকে ৬৪ জেলায় ভাগ করা হলে যে পরিমাণ, আমাদের ভাগে পড়ে সে পরিমাণ জনবল জাপানে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।’
মুন্সীগঞ্জের সদর, টঙ্গিবাড়ী ও লৌহজংয়ের নদী ভাঙন, বিএনপি নেতাদের অবৈধভাবে বালু উত্তলন এবং ভাঙন প্রতিরোধ ব্যবস্থার বিষয়ে এদিন বিএনপির এই জৈষ্ঠ্য নেতা বলেন, ‘আমরা নদী ভাঙন নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। টঙ্গীবাড়ি ও লৌহজং—এ দুটি উপজেলা সবচেয়ে বেশি নদী ভাঙনপ্রবণ। নদী ভাঙনের ফলে ইতোমধ্যে লৌহজংয়ের তিনটি ইউনিয়ন নদীতে সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে গেছে। টঙ্গিবাড়ীর অনেক এলাকা নদীতে বিলীন হয়েছে। এ নদী ভাঙন হচ্ছে অপরিকল্পিত ও অবৈধভাবে বালু লুট এবং প্রাকৃতিক কারণে। যারা দলের ট্যাগ লাগিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে, তারা যত বড় মাপের নেতা হোক, তাদেরকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’
নদী ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ড. আসাদুজ্জামান বলেন, তাদের দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা রাষ্ট্রের টাকার লুণ্ঠন এবং অপব্যবহার কারণে নদী ভাঙনের কার্যকর কোনো ব্যবস্থা হচ্ছে না। ভাঙনরোধে নদীতে জিও ব্যাগ এবং ব্লক বিছানোর কথা, কিন্তু তারা ঠিকমতো করছে না। যে স্ট্যান্ডার্ড মেনে কাজ করার কথা, তারা সেভাবে কাজ করছে না। এর ফলে ভাঙনপ্রবণ এলাকাসহ পুরো মুন্সীগঞ্জ এখন ঝুঁকিপূর্ণ।’
ভাঙন রোধে গোটা জেলা নদী শাসন টেকসই অবস্থান নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়ে আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দিঘীরপাড় বাজার রক্ষায় পদ্মার পাড় ঘেঁসে মেরিন ড্রাইভ নির্মাণের জোর প্রস্তাব করা হবে। নদী ভাঙনে যারা বাস্তুহারা হয়েছেন, সরকারি জায়গায় তাদের পুনর্বাসন করা হবে।’
এদিন মানববন্ধন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসাধারণ সম্পাদক শাহ আলম হোসেন, দিঘীরপাড় ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি অলি উল্লাহ খান, ইউনিয়নের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আতাউর রহমানসহ ছাত্রদল, যুবদলের নেতাকর্মীরা।