সাবেক এমপি দিদারুল ও স্ত্রী ইসমাতের বিরুদ্ধে মামলা দুদকের

চট্টগ্রামের সাবেক সংসদ সদস্য দিদারুল আলম ও তার স্ত্রী মোসা. ইসমাত আরা বেগমের বিরুদ্ধে বিপুল অঙ্কের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পৃথক দুটি মামলা করেছে।
এতে দুই মামলায় ২০টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রায় ৯৫০ কোটি টাকার সম্পদ নিয়ে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। এতে দুজনের অবৈধ সম্পদ মোট প্রায় ১৫ কোটি ৪৫ লাখ ৯৯ হাজার ৭৫৭ টাকার অস্তিত্ব মিলেছে বলে দুদকের দাবি।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুদক প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল মালেক এই দুটি এজাহার দায়ের করেন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদক চট্টগ্রাম-১ কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক সবুজ হোসেন ও উপসহকারী পরিচালক মেরিন আক্তার।
দুদকের এজাহারে বলা হয়েছে, সাবেক এমপি দিদারুল আলম অপরাধমূলক অসদাচরণ, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অসাধু উপায়ে ১৩ কোটি ৯৮ লাখ ৩৯ হাজার ৩০৭ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। পাশাপাশি ২০টি ব্যাংক হিসাবে ৯৪৮ কোটি ৮৮ লাখ ৮৩ হাজার ৮৩৮ টাকার বিপুল লেনদেনের মাধ্যমে আয়ের উৎস আড়াল করেছেন।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, তার স্থাবর সম্পদ ২৪ কোটি ৩৩ লাখ ২০ হাজার ৯৬১ টাকা এবং অস্থাবর সম্পদ ৩৩ কোটি ২৭ লাখ ৬৮ হাজার ৭৪৭ টাকা, মোট ৫৭ কোটি ৬০ লাখ ৮৯ হাজার ৭০৮ টাকা। কিন্তু ২০১০-১১ থেকে ২০২৪-২৫ করবর্ষ পর্যন্ত তার বৈধ আয়ের উৎস মিলেছে মাত্র ৪৩ কোটি ৬২ লাখ ৫০ হাজার ৪০১ টাকা। ফলে ঘোষিত সম্পদ ও বৈধ আয়ের মধ্যে ১৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকার অমিল ধরা পড়ে।
এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলা (নং-২২) দায়ের করা হয়েছে।
একই দিনে সাবেক এমপির স্ত্রী মোসা. ইসমাত আরা বেগমের বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের হয়। দুদকের অনুসন্ধানে তার নামে ৩ কোটি ১৮ লাখ ২৩ হাজার ১৪৩ টাকার সম্পদ পাওয়া গেলেও বৈধ আয়ের উৎসে মিলেছে মাত্র ১ কোটি ৭০ লাখ ৬২ হাজার ৬৯৩ টাকা। ফলে ১ কোটি ৪৭ লাখ ৬০ হাজার ৪৫০ টাকার সম্পদের কোনো গ্রহণযোগ্য উৎস পাওয়া যায়নি।
এজাহারে বলা হয়, ইসমাত আরা বেগম তার স্বামীর দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত অর্থে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। আর দিদারুল আলম অসাধু অর্থে স্ত্রীর নামে সম্পদ গড়ে তুলতে সহযোগিতা করেছেন। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় মামলা (নং-২৩) দায়ের করা হয়।
দুদক জানিয়েছে, মামলার তদন্তে আসামিদের আরও গোপন সম্পদ ও সহযোগীদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।