পদ্মার ভাঙনে মানিকগঞ্জে ৮ শতাধিক ঘরবাড়ি বিলীন

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার চরাঞ্চলে গত তিন বছরে পদ্মার ভয়াবহ ভাঙনে আট শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। উপজেলার লেছড়াগঞ্জ, আজিমনগর ও সুতালড়ি ইউনিয়নে এই ভাঙন সবচেয়ে তীব্র আকার ধারণ করেছে। শুধু বসতভিটাই নয়, নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে শত শত বিঘা ফসলি জমি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও সরকারি-বেসরকারি নানা স্থাপনা।
চলতি বছর হরিরামপুরের লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের হরিহরদিয়া, গঙ্গাধরদী, সেলিমপুর, জয়পুর ও উত্তর পাটগ্রামে তিন শতাধিক ঘরবাড়ি এবং শত শত বিঘা ফসলি জমি পদ্মায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। গত বছর হরিহরদিয়ার নটাখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গঙ্গাধরদীর পাঠানকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীগর্ভে চলে যায়। বর্তমানে ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে নটাখোলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র, নটাখোলা আফরোজা উচ্চ বিদ্যালয় ও লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ ভবনও।
গত তিন বছরে নদী ভাঙনে বিলীন হওয়া গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার মধ্যে রয়েছে আজিমনগর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের চারতলা ভবন, ইউপি ভবন, হাতিঘাটা ও সোয়াখাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং সুতালড়ি ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন। সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে স্থানীয় মানুষ।
জয়পুর এলাকার গৃহবধূ জোৎস্না বেগম বলেন, ‘অনেক কষ্টে ১৪ লাখ টাকা খরচ করে একটা পাকা ঘর দিছিলাম, ভাইঙ্গা নদীর ওইপাড় চালা ইউনিয়নের চালায় রাখছি। যেকোনো সময় আমগো বাড়ি পদ্মায় ভাইঙ্গা যাইবো। আমগো সব শ্যাষ হইয়া যাইতেছে, কেউ চাইয়া দেখতেছে না।’
উত্তর পাটগ্রামের বেলায়েত হোসেন ও রফিক মাদবর জানান, তাদের ২০ বিঘা আবাদি জমি ছিল, যা এখন আর নেই।
লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ড সদস্য মোতালেব হোসেন বলেন, এই বছর ইউনিয়নের কয়েকটি মসজিদ, সেলিমপুর, হরিহরদিয়া ও গঙ্গাধরদী বাজার ভেঙে গেছে।
হরিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তৌহিদুজ্জামান খান জানান, সেলিমপুর, জয়পুর, হরিহরদিয়া, নতুনহাট, হরিনাঘাট এলাকায় ২০০ হেক্টরেরও বেশি ফসলি জমি পদ্মায় ভেঙে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আখতারুজ্জামান জানান, তারা ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন এবং খুব দ্রুতই ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।