দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় স্বল্প খরচে জলবায়ু সহনশীল আবাসনের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

জলবায়ু ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়ের টেকসই এবং সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন সমাধানে সহায়তার জন্য বাংলাদেশে জাতিসংঘ-হ্যাবিট্যাটের উপস্থিতি সম্প্রসারণের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ফাঁকে জাতিসংঘ-হ্যাবিট্যাটের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং নির্বাহী পরিচালক আনাক্লাউদিয়া রসবাখের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বৈঠকে শহর এলাকার জন্য সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ক্ষুদ্র ঋণভিত্তিক আবাসন সমাধান এবং ঝুঁকিপূর্ণ সম্প্রদায়ের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের বিশ্বব্যাপী প্রভাবসহ বিস্তৃত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকে ঘনঘন বন্যা, নদী ভাঙন এবং ঘূর্ণিঝড়ের কবল বাসিন্দাদের জন্য তৈরি প্রেক্ষাপট ও বহুমুখী আবাসন মডেল তৈরিতে জাতিসংঘ-হ্যাবিট্যাটের প্রতি আহ্বান জানান অধ্যাপক ইউনূস। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দুর্যোগ ক্রমশ তীব্র হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বন্যা, ঘূর্ণিঝড় এবং নদী ভাঙনের ফলে প্রতি বছর হাজার হাজার বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে যায়। এই মানুষদের জন্য জরুরিভাবে টেকসই এবং সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন সমাধানের প্রয়োজন।
তিনি উদ্ভাবনী নকশা সমাধানের প্রস্তাব করেছিলেন, যেমন বন্যার সময় নৌকার মতো ব্যবহারযোগ্য ছাদ নির্মাণ করা।
নারীবান্ধব ঘর ডিজাইনের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে ড. ইউনূস বলেন, আমাদের অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে-আবাসন নকশা নারীদের চাহিদা পূরণ করে এবং তাদের জন্য দৈনন্দিন জীবনকে আরও সুবিধাজনক করে তোলে।
বাংলাদেশে বর্তমানে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য টেকসই আবাসনের জরুরি প্রয়োজনীয়তার বিষয়টিও বৈঠকে তুলে ধরা হয়। অধ্যাপক ইউনূস আগামী সপ্তাহে নিউইয়র্কে রোহিঙ্গা সংকটের ওপর অনুষ্ঠেয় উচ্চ পর্যায়ের জাতিসংঘ সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য ইউএন-হ্যাবিট্যাটকে আমন্ত্রণ জানান।
রসবাখ বলেন, আসন্ন রোহিঙ্গা সম্মেলনে যোগ দিতে ইউএন-হ্যাবিট্যাটের আগ্রহ আছে এবং আগামী মাসগুলোতে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনের জন্য গৃহায়ন ও শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানের আমন্ত্রণের প্রতি ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন।
বাংলাদেশের মতো জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশে ইউএন-হ্যাবিট্যাটের শক্তিশালী উপস্থিতি অত্যন্ত জরুরি। তিনি আসন্ন জিরো ওয়েস্ট ফোরাম (১৭–১৯ অক্টোবর, ইস্তানবুল) এবং আজারবাইজানের বাকুতে পরবর্তী ইউএন-হ্যাবিট্যাট ওয়ার্ল্ড আরবান ফোরামে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানান।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকেও আলোচনার গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে তুলে ধরা হয়। শহর ও বস্তি উভয় জায়গায় টেকসই প্রযুক্তিভিত্তিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
আবাসন ও শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুতফে সিদ্দিকী এবং এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।