শিবিরনেতাকে বানানো হল ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল গত বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সারাদেশে ৭০টি নতুন কমিটি প্রকাশ করেছে। তার মধ্যে নোয়াখালী জেলার চাটখিল কামিল মাদ্রাসার কমিটি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। শেখ ফরিদ নামে এই কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি যাকে করা হয়েছে, তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের রানিং সাথী এবং চাটখিল উত্তর থানা শাখার অফিস সম্পাদক।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির স্বাক্ষরিত এই কমিটি প্রকাশের পরই বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।
বিতর্কের কেন্দ্রে থাকা শিবিরনেতা শেখ ফরিদ ২০২০ সালে চাটখিল কামিল মাদ্রাসায় পড়াশোনা শেষ করে বর্তমানে নোয়াখালী সরকারি কলেজে অধ্যয়ন করছেন।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ফেসবুকে নবগঠিত কমিটির ছবি পোস্ট করে শেখ ফরিদ তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ফরিদ লেখেন, ‘গতকাল রাতে আমি এটা দেখতে পেলাম। এ ব্যাপারে আমি অবগত ছিলাম না। আমি ২০২০ সালে চাটখিল কামিল মাদ্রাসা থেকে বিদায় নিয়েছি। আমার এই কমিটিতে থাকার কোনো যৌক্তিকতা নেই। সর্বোপরি, ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটি সম্পূর্ণ আমার অগোচরে হয়েছে। এই ব্যাপারে আমি তীব্র প্রতিবাদ জানাই।’
পোস্টের শেষে শেখ ফরিদ স্পষ্ট করে উল্লেখ করেন, ‘বিঃদ্রঃ- আমি বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের রানিং সাথী এবং চাটখিল উত্তর থানা শাখার অফিস সম্পাদক।’
চাটখিল কামিল মাদ্রাসার নবগঠিত কমিটির সভাপতি ফাহাদ হোসেন দাবি করেন, ফরিদ শিবির করতো, তা তাদের জানা ছিল না। ফাহাদ হোসেন বলেন, ‘সে কমিটিতে থাকার জন্য আমাকে তার মোবাইল নম্বরসহ বিভিন্ন তথ্য প্রদান করেছে। সে তখনও বলেনি, সে শিবির করে।’

তবে শিবির নেতা শেখ ফরিদ সভাপতি ফাহাদ হোসেনের দাবি অস্বীকার করে বলেন, ‘সে (ফাহাদ) আমার বন্ধু হিসেবে আমার কাছ থেকে তথ্য নিয়েছে। ছাত্রদলের কোনো পোস্টে থাকার বিষয়ে বিস্তারিত আমার সাথে কোনো কথা হয়নি। আমি ছাত্রশিবির করি এ বিষয়ে সে অবগত।’
নোয়াখালী জেলা উত্তর শাখা শিবিরের সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ছাত্রদল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী-বান্ধব কাজ না করে পেশিশক্তির নির্ভর ও ট্যাগিংয়ের রাজনীতি করায় এখন কমিটি গঠনের জন্য লোক পাচ্ছে না। যারে তারে ইচ্ছে মতো কমিটির সদস্য বানিয়ে দিচ্ছেন। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি মঞ্জুরুল আলম রিয়াদ বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা মাঠপর্যায়ে যাচাই-বাছাই করে যে তথ্য পাই, তার ভিত্তিতেই কমিটি গঠন করা হয়। যারা ইচ্ছাকৃতভাবে তথ্য গোপন করে, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।