শেয়ারবাজারে নতুন প্রণোদনার প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের

চলতি অর্থবছরের চেয়ে বড় কোনো পরিবর্তন না হলেও আসছে অর্থবছরের (২০১৫-১৬) বাজেটে শেয়ারবাজারের জন্য কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ থাকছে। সংশ্লিষ্টদের দাবি, বাজারের স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনতে একটি তহবিল গঠন করা হোক। নতুন নতুন প্রণোদনা প্রত্যাশা করছেন তাঁরা। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, বাজেটে প্রণোদনা দিয়ে দীর্ঘ মেয়াদে বাজারকে ঠিক করা সম্ভব নয়; দরকার স্বচ্ছতা ও কাঠামোগত পরিবর্তন।
urgentPhoto
প্রস্তাবিত বাজেটে বিনিয়োগকারীদের করমুক্ত লভ্যাংশের সীমা বাড়ছে। তবে করমুক্ত লভ্যাংশের সীমা ৫০ হাজার টাকার বেশি করার দাবি স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর।
আর লেনদেনের ওপর উৎসে কর ৫ পয়সা থেকে কমিয়ে দেড় পয়সা করার দাবি জানানো হলেও এ ব্যাপারে প্রস্তাবিত বাজেটে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
আড়াই শতাংশ করপোরেট ট্যাক্স কমানোর কথা আছে প্রস্তাবিত বাজেটে। এই সুবিধা তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রেও দেওয়ার সুপারিশ করেছে স্টক এক্সচেঞ্জ।
২০ শতাংশের বেশি লভ্যাংশ দেওয়া তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে ১০ শতাংশ কর রেয়াতের প্রাপ্ত সুবিধা প্রত্যাহার করার প্রস্তাব করা হয়েছে। অবশ্য গত অর্থবছরের মতো এই সুবিধা বহাল রাখার সুপারিশ করা হয়েছে স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে।
আসছে বাজেটে বিন্যস্তকৃত (ডিমিউচুয়ালাইজড) স্টক এক্সচেঞ্জের আয়ের ওপর ক্রমহ্রাসমান হারে করমুক্ত করার প্রস্তাব আছে। তবে পাঁচ বছরের জন্য করমুক্ত সুবিধা দেওয়ার জন্য উভয় এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।
আর মূলধনি লাভের ওপর উৎসে কর কর্তনের বিধান রাখা হয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে, যা বাতিলের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে শেয়ারবাজারের স্টেকহোল্ডারদের পক্ষ থেকে।
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, বাজেটে এমন কিছু পদক্ষেপ থাকুক, যাতে বাজারে গতি আসে।
দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রফেসর স্বপন কুমার বালা বলেন, ‘একটা বিশেষ তহবিল যেন এই বাজেটে আসে, যাতে সেটার মাধ্যমে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা কিছুটা সুবিধা পায়। আমরা আশা করছি, মার্কেট রিলেটেড কোনো ইস্যু অন্তত নেগেটিভলি আসবে না। এ মুহূর্তে যেটা আছে, সেটা থাকবেই। এর চেয়ে বেশি কিছু পাব বলে আশা করছি।’
বিশ্লেষকদের মতে, শেয়ারবাজারে নতুন করে অর্থ ঢুকছে না। আর নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার অস্বচ্ছতার কারণে বিভিন্ন ফাঁকফোকর দিয়ে বাজার থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা চলে যাচ্ছে। বাস্তবতার সঙ্গে মিল রেখে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে শেয়ারবাজারের পরিবর্তন সম্ভব নয় বলে মনে করেন তাঁরা।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘সাময়িক সুবিধা দিয়ে বাজারের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষত কিংবা বাজারের স্থিতিশীলতা আনা খুব দুরূহ ব্যাপার। আমার কাছে মনে হয়, প্রণোদনার পাশাপাশি কার্যকর দীর্ঘমেয়াদি সংস্কারের জন্য আইনগত, নীতিগত ও পরিচালন পর্যায়ের যেসব দুর্বলতা রয়েছে, সেগুলো সংস্কারের ব্যাপারেও অর্থমন্ত্রীর একটা ঘোষণা থাকা উচিত।’
আসছে বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য কী কী রাখা হবে, তা দেখতে ৪ জুন পর্যন্ত অপেক্ষা কবতে হবে।