তেমন পরিবর্তন ছাড়াই পাস হচ্ছে বাজেট

কোনো ধরনের বড় পরিবর্তন ছাড়াই পাস হতে যাচ্ছে প্রায় তিন লাখ কোটি টাকা ব্যয়ের ফর্দ ধরা ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের জাতীয় বাজেট। ৪ জুন জাতীয় সংসদে এ বাজেটপ্রস্তাব উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
শনিবার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানান, এবারের বাজেট আলোচনার নজর মোটামুটি বাজেটের ওপরই সীমাবদ্ধ আছে। বাজেটের কিছু কিছু বিষয়ে সমালোচনা হয়েছে, প্রশংসাও করেছেন অনেকে। কিছু সংযোজন-বিয়োজনেরও প্রস্তাবও এসেছে। এসব বিবেচনায় নিয়েই আগামীকাল সোমবার অর্থবিল এবং আগামী মঙ্গলবার মূল বাজেট পাস হবে বলে জানান তিনি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমার এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে তেমন কোনো পরিবর্তন আসবে না। চিনিসহ কয়েকটি পণ্যে শুল্ক বিষয়ে যে সংশোধন আনার সেটি আমি এরই মধ্যে এনেছি। ছোটখাটো আর দু-একটি বিষয় ছাড়া তেমন কোনো পরিবর্তন আসবে না বাজেটে।‘
মুহিত জানান, জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা এরই মধ্যে মতামত দিয়েছেন। আজ ও আগামীকাল আরো কয়েকজন বাজেটের ওপর আলোচনা করবেন। সর্বশেষ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাজেটের ওপর আলোচনা করবেন। সবার আলোচনা বা মতামতের ভিত্তিতে বাজেটে কিছু সংযোজন-বিয়োজন আনা হতে পারে।
অর্থবিল পাস হবে ২৯ জুন। অর্থবিল পাসের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর বক্তব্য দেবেন। তারপর অর্থমন্ত্রী বাজেটের ওপর সমাপনী বক্তব্য দেবেন এবং অর্থবিল পাসের জন্য উত্থাপন করা হবে বলে জানান মুহিত।
প্রথা অনুযায়ী, কোনো সংশোধনী আনতে হলে অর্থমন্ত্রীর সমাপনী বক্তব্য এবং অর্থবিল পাসের আগে প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাজেট বক্তৃতার শেষে অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান। এরপর অর্থমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধ আমলে নিয়ে সেসব বিষয়ে সংশোধনী আনার প্রস্তাব করেন।
সাতটি বাজেট দেওয়া অর্থমন্ত্রী মুহিত বলেন, সংসদের বাইরেও বিভিন্ন মহল থেকে আসা সুপারিশগুলো তিনি বিচার-বিশ্লেষণ করেছেন। তবে বড় কোনো পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে বলে মনে করছেন না। তিনি বলেন, ‘আমি এমন বাজেট দিয়েছি, যার বড় ধরনের কোনো পরিবর্তনের প্রয়োজন হবে না, যেটার প্রয়োজন ছিল সেটা আমি এরই মধ্যে এনেছি।’
এদিকে অর্থমন্ত্রণালয় এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তারা জানান, অর্থমন্ত্রী বাজেটে যেসব কর প্রস্তাব করেছেন তার প্রায় সবই থাকছে। পরিবর্তন আনা হতে পারে কেবল দু-একটি বিষয়ে।
এর মধ্যে, প্রস্তাবিত বাজেটে ন্যূনতম কর চার হাজার টাকা করার যে প্রস্তাব করা হয়েছিল তা পরিবর্তন করে ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকার জন্য ন্যূনতম কর পাঁচ হাজার টাকা করা হতে পারে।
এ ছাড়া অন্য সিটি করপোরেশন ও জেলা সদরের করদাতাদের জন্য ন্যূনতম কর চার হাজার টাকা এবং অন্যান্য এলাকার করদাতাদের জন্য এই কর তিন হাজার টাকা করা হতে পারে।
বিদায়ী ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেটে সিটি করপোরেশন, জেলা সদরের পৌরসভা এবং অন্যান্য এলাকার জন্য ন্যূনতম কর যথাক্রমে তিন হাজার, দুই হাজার এবং এক হাজার টাকা ছিল। প্রস্তাবিত বাজেটে তা সবার জন্য একই, চার হাজার টাকা করার প্রস্তাব করেছিলেন অর্থমন্ত্রী।
তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের দাবির পরিপেক্ষিতে প্রস্তাবিত বাজেটে পোশাক রপ্তানির ওপর ১ শতাংশ হারে উৎসে কর কাটার যে প্রস্তাব করা হয়েছিল, তা কমিয়ে দশমিক ৮ শতাংশ করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
বিদায়ী বাজেটে তৈরি পোশাক রপ্তানি মূল্যের ওপর দশমিক ৩০ শতাংশ এবং অন্যান্য পণ্যে দশমিক ৬ শতাংশ হারে উৎসে কর কেটে রাখা হতো। প্রস্তাবিত বাজেটে তা সব ক্ষেত্রেই ১ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।