হিসাব-কেলেঙ্কারির দায়ে তোশিবা প্রধানের পদত্যাগ

জাপানের বহুজাতিক কম্পানি তোশিবার প্রধান নির্বাহী হিসাও তানাকা হিসাব-কেলেঙ্কারি দায়ে আজ মঙ্গলবার পদত্যাগ করেছেন। তিনি এই কোম্পানির সভাপতি, প্রধান নির্বাহী ও প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। গত ছয় বছরে কোম্পানিটি মুনাফা বাড়িয়ে দেখিয়েছে বলে হিসাব কারসাজির অভিযোগের প্রমাণ মেলায় তিনি তাঁর পদ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে আজ জানানো হয়েছে, তানাকার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন তোশিবার চেয়ারম্যান মাসাশি মুরোমাচি। কোম্পানির ভাইস-চেয়ারম্যান নোরিও সাসাকির পদত্যাগ করেছেন।
তোশিবার নিয়োগ দেওয়া এক দল স্বাধীন নিরীক্ষক দল গতকাল সোমবার জানিয়েছে, গত ছয় বছরে কোম্পানিটি মোট এক হাজার ২২০ কোটি ডলার পরিচালন মুনাফা বাড়িয়ে দেখিয়েছে। অতিরঞ্জিত এই মুনাফার অঙ্ক প্রকৃত হিসাবের তিনগুণ।
হিসাব কারসাজি করে মুনাফা বাড়িয়ে দেখানোয় কোম্পানির পক্ষ থেকে আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থনা করা হয়েছে। এক বিবৃতিতে তোশিবা বলেছে, ‘দীর্ঘদিন ধরে তোশিবা অনুপযুক্ত হিসাব উপস্থাপন করে এসেছে। এতে শেয়ারহোল্ডার ও স্টেকহোল্ডাররা মারাত্মক সমস্যায় পড়েছেন। এ জন্য আমরা গভীরভাবে ক্ষমাপ্রার্থী।’
হিসাব-কেলেঙ্কারি দায়ে কোম্পানির সভাপতি হিসাও তানাকা ও ভাইস চেয়ারম্যান নোরিও সাসাকি আজ পদত্যাগ করবেন বলে ওই বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে তানাকা বলেন, ‘আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছি। কোম্পানির পক্ষ থেকে নতুনভাবে পদবিন্যাস করা প্রয়োজন হবে।’
৬৪ বছর বয়সী তানাকা ও ৬৬ বছর বয়সী সাসাকি ১৯৭০ সাল থেকে তোশিবার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
২০০৯ সালের জুন থেকে ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত সাসাকি তোশিবার পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর সময়ে বেশির ভাগ হিসাব বছরে কোম্পানি বড় অঙ্কে মুনাফা করেছে।
আতসুতোশি নিশিদা ২০০৬-২০০৯ সাল পর্যন্ত প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পরে তিনি কোম্পানির উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনিও পদত্যাগ করেছেন।
কয়েক বছর ধরে তোশিবার মুনাফা বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে- স্বাধীন নিরীক্ষকদের এমন প্রতিবেদন কোম্পানির জ্যেষ্ঠ ব্যস্থাপকরা পাওয়ার পর তানাকাসহ উচ্চপদস্থ আট নির্বাহী পদত্যাগ করেছেন।
এ ঘটনায় বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক নিন্দা ও ক্ষোভের ঝড় উঠেছে।
এক টুইটার ব্যবহারকারী লিখেছেন, এভাবে আর কত দিন চলবে।
অন্য এক টুইটার ব্যবহারকারী লিখেছেন, পুরো কোম্পানি সাফ করা হোক। তোশিবার উচিত সঠিক উত্তরাধিকার খুঁজে বের করা।
স্বাধীন নিরীক্ষকদের ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, তশিবার উচিত ২০০৮ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৪ সালের মার্চ পর্যন্ত কোম্পানির মুনাফার হিসাব পুনর্মূল্যায়ন করা। এটা না হলে কোম্পানির ২০১৫ সালের হিসাবের ফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।