বাজেটে রোহিঙ্গাদের জন্য পরিষ্কার চিত্র চায় সিপিডি

আগামী বাজেটে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা নাগরিকদের বিষয়ে একটা পরিষ্কার চিত্র তুলে ধরার দাবি জানিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ-সিপিডি।
আজ রোববার সকালে চট্টগ্রামে ‘রোহিঙ্গা সংকটের অর্থনৈতিক প্রভাব ও আসন্ন বাজেট’ শীর্ষক নাগরিক সংলাপে শরণার্থী সমস্যার ভয়াবহতা তুলে ধরেন আলোচকরা।
সিপিডির গবেষণা অনুযায়ী, বিভিন্ন দেশে শরণার্থী প্রত্যাবাসনে গড়ে ২৫ বছর সময় ধরা হয়েছে। তারপরও বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের এ সংক্রান্ত চুক্তি যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হলেও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসন করতে সময় লাগবে কমপক্ষে সাত বছর। এই অবস্থায় আসন্ন বাজেটে রোহিঙ্গাদের ব্যাপারেও পরিষ্কার চিত্র তুলে ধরাটা জরুরি।
সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘এই মুহূর্তে দাতাগোষ্ঠীর একটা বড় মতামত হলো, আমি যতটুকু বুঝি, তারা মুখে না বললেও তারা ধরে নিয়েছে এই মানুষগুলো এখানে থাকবে। তারা যাবে না। সেহেতু তাদের মতামত হলো, যত তাড়াতাড়ি তোমরা, এদের শিক্ষা-দীক্ষা দিয়ে দক্ষতা বৃদ্ধি করে অন্তর্ভুক্ত করে নিবে, ততই ভালো। আমাদের সরকারের পক্ষে কোনো অবস্থাতেই রাজনৈতিকভাবে এই কথাটা এই মুহূর্তে স্বীকার করা সম্ভব না। কারণ তাহলে আমাদের যেসব দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, সেগুলো কিন্তু এর ভেতরে ঢুকছে না। তাহলে বুঝতে পারছেন, সময় এবং অবস্থানের মধ্যে একটি তারতম্য সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশে।’
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘এটার একটা গভীর হিসাব করে আমাদের সত্যি তুলে ধরতে হবে। আন্তর্জাতিক পরিসরে আমরা তুলে ধরতে পারব যে, এদের কারণে আমরা এতো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। তাহলে আমরা আরো জোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বলতে পারব যে, আমাদের কত প্রয়োজন। আরেকটা বিষয় হচ্ছে যেহেতু বাজেট সামনেই আসছে আর বাজেটের প্রেক্ষিতেই আমরা বলছি, বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন ধরনের যে সাহায্যগুলো করছে, এগুলোর একটা পরিষ্কার চিত্র চাই। কোন মন্ত্রণালয় কত করছে? এবং সামনের বাজেটে কত বরাদ্দ রাখছে? কিংবা বিদেশ থেকে কত আশা করছে? এ ধরনের একটা স্বচ্ছতা থাকলে, আমরা বুঝতে পারব, রোহিঙ্গাদের জন্যে আসলে কি ধরনের তৎপরতা চালানো হচ্ছে।’
আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা রোহিঙ্গাদের বিকল্প ব্যবস্থায় প্রত্যাবাসনের দাবি জানান। একই সঙ্গে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, দাতাগোষ্ঠীরা মুখ ফিরিয়ে নিলে বাংলাদেশকেই এই চাপ নিতে হবে।
অনুষ্ঠানে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া কক্সবাজারের এলাকাগুলোতে বন ও পরিবেশের যে সমূহ ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে সেগুলোও তুলে ধরা হয়।
এই নাগরিক সংলাপে টেকনাফের স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, উন্নয়নকর্মী, ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা অংশগ্রহণ করেন।