‘বাজেট দেওনের কী দরকার?’

‘বাজেট-টাজেট না দিলে হয় না? হুড়মুড় করে দাম বাড়ে শুধু। একখান করে বাজেট আইলেই হকল (সকল) জিনিসের দাম বাড়ে। বাজেট না দিলে যদি দাম ঠিক থাকে তাইলে বাজেট দেওনের কী দরকার?’
কথাগুলো বলছিলেন একজন মিন্তি—যার কাজ মাথায় করে বাজারের বোঝা টানা। গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে কথা হয় মিন্তি শরিফুল ইসলামের সঙ্গে। এনটিভি অনলাইনকে এভাবেই বাজেট নিয়ে নিজের ক্ষোভের কথা জানাচ্ছিলেন ৫৫ বছর বয়সী খেটে খাওয়া এই ব্যক্তি।
শরিফুল ইসলাম জানালেন, ২০ বছর ধরে এই কারওয়ান বাজারেই মিন্তির কাজ করেন তিনি। টাকার বিনিময়ে ক্রেতাদের জিনিসপত্র মাথায় করে পৌঁছে দেওয়াই তাঁর কাজ। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে থাকেন কারওয়ান বাজার বস্তিতেই।
বাজেট সম্পর্কে কী জানতে চাইলে শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘বাজেট-টাজেট অতশত বুঝি না। শুধু দেহি বাজেট আইলেই হকল জিনিসের দাম বাইড়া যায়। য্ত কষ্ট সব আমার মতো গরিবের। হারাদিন কাজ করে যা কামাই সব চইলা যায় চাল-নুন কিনতে কিনতে। একটা ছেলে লেখাপড়া করে। খুব কষ্ট করে চলতে হয়।’
শরিফুল ইসলাম আরো বলেন, ‘একটু গুল আর পান খাই শুধু। আর কোনো কিছু শখ করে খাই না। তাও হুনলাম গুল-জদ্দার দাম বাইড়া গেছে। তাইলে আর বাজেটে কী অইব?’
পেট্রোবাংলা ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা কবীর আলী নামের এক রিকশাচালকের সঙ্গেও কথা হয় এনটিভি অনলাইনের। বাজেট প্রসঙ্গ তুলতেই তিনি বলেন, ‘বাজেট তো বড় লোকদের জন্য। আমাদের জন্য কোনো বাজেট হয় না। আমাদের রক্ত কীভাবে খাওয়া যাবে বাজেট হয় সেই জন্য!’
কারওয়ান বাজারের কাঁচামালের ব্যবসা করেন নাবিল উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আমি বাপু বাজেট বুঝি না। কিন্তু বাজেটের পর থেকে সব কিছুর দাম বাড়বো এইটা শুনতেছি। আমরা গরীব মানুষ। আল্লাহ যেভাবে বাঁচায় সেভাবে বেঁচে থাকব।’
প্রায় একই কথার পুনরাবৃত্তি করলেন কারওয়ান বাজারের আশপাশের খেটে খাওয়া মানুষেরা।