কাঁকড়ায় ঘুরেছে চাষিদের ভাগ্যের চাকা

একসময় নদনদীর লবণাক্ত পানিতে জন্ম নেওয়া কাঁকড়া ভেসে আসত উপকূলে। তা কুঁড়িয়ে বিক্রি করা হতো। এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে।
কাঁকড়া চাষ সাতক্ষীরার মানুষের ভাগ্য পাল্টে দিয়েছে। অল্প জমি, কম সময় আর সামান্য খরচে লাভ বেশি হওয়ায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এর চাষ। আর চাষের কাঁকড়া বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।
চিংড়ি চাষে দরকার অনেক জমি। দরকার বড় অঙ্কের পুঁজি। সময়ও বেশি লাগে। তবে কাঁকড়া চাষে সময় লাগে মাত্র তিন থেকে চার সপ্তাহ। অল্প জমি ব্যবহার করে সামান্য পুঁজি বিনিয়োগে কাঁকড়া হয়ে ওঠে বিপণনযোগ্য। ফলে সাতক্ষীরার চাষিরা চিংড়ি ছেড়ে বেছে নিয়েছেন কাঁকড়ার চাষ। নদী থেকে লবণাক্ত পানি তুলে এনে জেলার আশাশুনি, কালীগঞ্জ, শ্যামনগর ও দেবহাটায় ছোট ছোট ঘেরে কাঁকড়া চাষ করা হয়।
কাঁকড়া চাষ সাতক্ষীরার মানুষের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছে। এর মাধ্যমে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন গৃহিণীরাও।
প্রতি বছর শীত মৌসুম কাঁকড়া চাষের উপযুক্ত সময়। তবে অনুকূল পরিবেশ থাকায় সাতক্ষীরায় এখন ১২ মাস কাঁকড়ার চাষ হচ্ছে।
রপ্তানিযোগ্য কাঁকড়া প্রকার ভেদে প্রতি কেজি ৬০০ টাকা থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।
চাষিরা বলেন, অল্প জায়গায় কাঁকড়া চাষ করে বেশি লাভ করা যায়। আর চিংড়ির মতো কাঁকড়া চাষে তেমন ঝুঁকি নেই। আর কাঁকড়া চাষে সরকারও সহায়তা দিচ্ছে।
সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবদুল ওয়াদুদ বলেন, ‘আমাদের যে প্রান্তিক চাষিরা আছেন তারা খুব উৎসাহী। গত বছর (২০১৫) আমাদের জেলা (সাতক্ষীরা) থেকে দুই হাজার ৮৪১ টন কাঁকড়া চাষ হয়।’
পোনা কাঁকড়ার জন্য সরকার হ্যাচারি স্থাপনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। গত বছর প্রায় তিন হাজার মেট্রিক টন কাঁকড়া সাতক্ষীরা থেকে রফতানি করা হয়েছে।