জামালপুরে হচ্ছে অর্থনৈতিক অঞ্চল

জামালপুরে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন প্রকল্পসহ মোট আটটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এসব প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে তিন হাজার ৫৮৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। আট প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে নতুন পাঁচটি ও সংশোধিত তিনটি।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সম্মেলন কক্ষের একনেক সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এসব প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
চলতি অর্থবছরে (২০১৫-১৬) একনেকের ২৬তম সভায় যেসব প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে, সেগুলো হচ্ছে :
১. ন্যাশনাল অ্যাগ্রিকালচারাল টেকনোলজি প্রোগ্রাম (দ্বিতীয় পর্যায়)। প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদকাল ২০১৫ সালের অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত। প্রকল্পের মোট ব্যয় এক হাজার ৮৭৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের অর্থায়ন (জিওবি) ২৭১ কোটি আট লাখ টাকা ও প্রকল্প সহায়তা থেকে ব্যয় হবে এক হাজার ৬০৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে কৃষি মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এটি নতুন প্রকল্প।
২. মানসম্পন্ন বীজ সরবরাহ বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প। এর মেয়াদকাল ২০১১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। আগে এর মেয়াদ ছিল ২০১১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৪ সালে জুন পর্যন্ত। মোট প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৪৪ কোটি ৯১ লাখ টাকা। আগে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৯৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা। সরকার অর্থায়ন করবে ৭২ কোটি ৩০ লাখ টাকা। প্রকল্প সহায়তা থেকে দেওয়া হবে ২৭২ কোটি ৬১ লাখ টাকা। কৃষি মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন এ প্রকল্পের বাস্তবায়ন করবে। এটি একটি সংশোধিত প্রকল্প।
৩. প্রাণিসম্পদ উৎপাদন উপকরণ ও প্রাণিজাত খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণ গবেষণাগার স্থাপন প্রকল্প। ২০১৬ সালের জুলাইয়ে শুরু হবে এর নির্মাণকাজ। শেষ হবে ২০২১ সালের জুনে। মোট প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৬ কোটি ১৩ লাখ টাকা, যার পুরোপুরি সরকার অর্থায়ন করবে। প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। এটি নতুন প্রকল্প।
৪. পল্লী বিদ্যুতায়ন কার্যক্রমের আওতায় ৭০ হাজার ওভারলোডেড বিতরণ ট্রান্সফরমার প্রতিস্থাপন প্রকল্প। এ প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরুর কথা ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে। শেষ হবে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে। মোট প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৯৯ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। সরকার অর্থায়ন করবে ৭৫৫ কোটি ২০ লাখ টাকা। প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হবে ৮৮ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে বিদ্যুৎ বিভাগ ও বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড। এটি নতুন প্রকল্প।
৫. জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন প্রকল্প। এ প্রকল্পের কাজ শুরু হবে ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে। আর শেষ হবে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে। মোট প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০২ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। এর পুরো টাকাই সরকার দেবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। এটি নতুন প্রকল্প।
৬. ইনস্টলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এপিএম) প্রজেক্ট । এর কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল ২০১০ সালের জুনে। এ প্রকল্প শেষ হবে ২০১৬ সালের জুন মাসে। এখন এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। এ প্রকল্পের কাজে সরকার দেবে ৬০ লাখ টাকা। প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হবে ৫৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। প্রকল্প সহায়তা থেকে দেওয়া হবে ৩৪ কোটি ২৪ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ এবং ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড। প্রথমবার এ প্রকল্পের সংশোধন দেওয়া হলো।
৭. সৌদি আরবের রিয়াদে বাংলাদেশ চ্যান্সারি কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্প। এ প্রকল্পের মেয়াদকাল ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের জুনে। মোট প্রকল্প ৪৭ কোটি ১৫ লাখ। পুরো টাকাই সরকার দেবে। প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সৌদি আরবের রিয়াদে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস। এ প্রকল্প প্রথমবার সংশোধন করা হলো।
৮. গাইবান্ধা-ফুলছড়ি-ভরতখালী-সাঘাটা সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন প্রকল্প। ২০০৬ সালে শুরু হয় এ প্রকল্পের কাজ। শেষ হবে ২০১৮ সালের জুনে। এটি বাস্তবায়ন করছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ এবং জনপথ অধিদপ্তর।
আট প্রকল্পের মোট ব্যয় তিন হাজার ৫৮৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকার অর্থায়ন করবে এক হাজার ৫৭১ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হবে ৯৮ কোটি ৭২ লাখ টাকা। এ ছাড়া এক হাজার ৯১৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা দেওয়া হবে প্রকল্প সাহায্য থেকে।