যেকোনো সময় বন্ধ সিটিসেল

বার বার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও সরকারের পাওনা শোধ করছে না দেশের প্রথম বেসরকারি টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান সিটিসেল। আর এ কারণেই ওই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম যেকোনো সময় বন্ধ করে দিতে পারে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে সিটিসেলের গ্রাহকদের বিকল্প সেবা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
বিকল্প সেবা গ্রহণের জন্য সিটিসেল গ্রাহকদের আগামী ১৬ আগস্ট পর্যন্ত সময় দিয়েছে বিটিআরসি। আজ রোববার বিটিআরসির পরিচালক এম. এ তালেব হোসেন এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সিটিসেলের গ্রাহকদের প্রতি ওই অনুরোধের কথা জানান।
সিটিসেলের কাছে সরকারের পাওনা রয়েছে সর্বমোট ৪৭৭ কোটি ৫১ লাখ টাকা। বিটিআরসির ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তরঙ্গ ফি নবায়নের দুটি কিস্তির অর্থ নির্ধারিত সময় চলে যাওয়ার পরও পরিশোধ করেনি সিটিসেল। এ ছাড়া স্পেকট্রাম নবায়নের ফি, বার্ষিক লাইসেন্স ফি, সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলসহ বিভিন্ন খাতের পাওনা টাকা পরিশোধ করেনি ওই প্রতিষ্ঠান।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, সরকারের প্রাপ্য রাজস্ব পরিশোধ না করে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া লাইসেন্সের শর্তাবলীর পরিপন্থী এবং টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ অবস্থায় বিটিআরসি সিটিসেলের ‘সেলুলোর মোবাইল ফোন অপারেটর লাইসেন্স’ এবং ‘রেডিও কমিউনিকেশনস ইক্যুইপমেন্ট লাইসেন্স’ বাতিল করার এখতিয়ার রাখে। কাজেই যেকোনো সময় সিটিসেলের তরঙ্গ বাতিল ও কার্যক্রম বন্ধসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিতে পারে বিটিআরসি।
এ ব্যাপারে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘অনেকবার তাগাদা দেওয়া হয়েছে ওই প্রতিষ্ঠানকে। এখন হুট করে তো আমরা কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে পারি না। গ্রাহকদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব আছে। গ্রাহকদের তো কোনো দোষ নেই। এ জন্য সিটিসেলের গ্রাহকদের একটা নির্দিষ্ট সময় দেওয়া হয়েছে যেন তাঁরা একটা বিকল্প ব্যবস্থা নিতে পারেন।’
এ ব্যাপারে সিটিসেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মেহবুব চৌধুরীকে ফোন করা হলেও তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
বিটিআরসির সর্বশেষ জুন মাসের তথ্য অনুযায়ী, সিটিসেলের বর্তমান গ্রাহক সংখ্যা সাত লাখ। ১৯৮৯ সালে বিটিআরসির লাইসেন্স পায় প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড, যা সিটিসেল নামে পরিচিত। এটিই বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র সিডিএমএ মোবাইল ফোন অপারেটর।
বর্তমানে সিটিসেলের প্রায় ৪৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক সিঙ্গাপুরভিত্তিক সিংটেল এশিয়া প্যাসিফিক। ফার ইস্ট টেলিকম ১৭ দশমিক ৫১ শতাংশ শেয়ারের মালিক। আর প্যাসিফিক মোটরসের হাতে আছে ৩৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ মালিকানা। ওই প্রতিষ্ঠানটির মালিক বিএনপি নেতা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোরশেদ খান।