আবাসন খাতে মন্দা

দেশের আবাসন খাতে মন্দাবস্থা বিরাজ করছে। এ খাত চাঙ্গা হলে অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এ জন্য বাজেটে বিশেষ প্রণোদনার প্রত্যাশা করেছেন ব্যবসায়ীরা। এ ক্ষেত্রে ফ্ল্যাট, প্লটের নিবন্ধন ফি ও করহার কমানোর দাবি তাঁদের।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের উচিত সামঞ্জস্যীকরণ করা। তবে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ফ্ল্যাট বা প্লটের মূল্য যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসা।
রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) হিসাবে বর্তমানে শুধু রাজধানীতেই অবিক্রীত অবস্থায় পড়ে আছে প্রায় ১০ হাজার ফ্ল্যাট। এ পরিস্থিতিতে আসছে বাজেটে (২০১৫-১৬) আবাসন খাতের জন্য বিশেষ উদ্যোগের প্রত্যাশা ব্যবসায়ীদের। বিশেষ করে, ফ্ল্যাট বা প্লটের নিবন্ধন-সংক্রান্ত ব্যয় ১৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৭ শতাংশে নিয়ে আসার দাবি তাঁদের। পাশাপাশি নিজেদের আয়কর কমিয়ে আনার প্রস্তাবও করছেন ব্যবসায়ীরা।
রিহাবের সহ-সভাপতি লিয়াকত আলী ভূইয়া বলেন, ‘যে সমস্ত স্ট্যাম্প ফি, গেইনস ট্যাক্স ফি রয়েছে এবং আমাদের যে আয়কর দিতে হয় তাও কমিয়ে আনতে দাবি জানিয়েছি। আমাদের প্রস্তাবগুলো গ্রহণ করা হয়, তাহলে এ খাত চাঙ্গা হবে।’
তবে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘স্ট্যাম ডিউটি বা রেজিস্ট্রেশন ফি- এগুলো কিন্তু ট্রানজিকশন ট্যাক্স। এ ধরনের ট্যাক্স কখনো ভালো ট্যাক্স নয়। এ ক্ষেত্রে কর কমানো উচিত বলে আমি মনে করি। অন্যান্য দিকে যেমন ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স আরো বেশি হওয়া উচিত। এই সামঞ্জস্যীকরণটা সরকারকে করতে হবে। গেইন ট্যাক্সটা কিন্তু ভোক্তা দেবে না। যিনি জমি, ফ্ল্যাট বিক্রি করেন, তিনিই তো ক্যাপিটাল গেইন করেছেন, তাই না? তাঁকে এটা দিতে হবে।’
দেশের আবাসন খাতের সঙ্গে রড, সিমেন্ট, ইট, গ্লাস, টাইলসসহ শতাধিক খাত জড়িত। তাই আবাসন খাতের মন্দাভাবের নেতিবাচক প্রভাব সংশ্লিষ্ট খাতগুলোতে পড়ছে। এ অবস্থায় বাজেটে আবাসন খাতের জন্য ইতিবাচক নীতি গ্রহণের তাগিদ রিহাবের।
লিয়াকত আলী ভূইয়া বলেন, আবাসন খাতে যদি মন্দা থাকে, সংশ্লিষ্ট অন্য খাতগুলোতেও মন্দা থাকবে।
ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘বিক্রি বাড়ুক, চাহিদা সৃষ্টি হোক। তাহলে কর্মযজ্ঞ হবে, কর্মসংস্থান হবে। রড-সিমেন্টের চাহিদা বাড়বে। সবাই উপকৃত হব। অর্থনীতি উপকৃত হবে। সেটা হওয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বর্তমানে প্লট, ফ্ল্যাটের মূল্যটা আরো কমিয়ে আনা।’ এ ছাড়া সাধারণ মানুষের জন্য স্বল্পসুদে দির্ঘমেয়াদি ঋণের ব্যবস্থা করা জরুরি বলে মনে করেন তিনি।