স্বর্ণের দাম সর্বকালের সর্বোচ্চ

আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম সর্বকালের সর্বোচ্চ চূড়ায় উঠেছে। মার্কিন ডলারের দুর্বলতা ও ফেডারেল রিজার্ভের সুদহার কমানোর কারণে এই দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। স্পট গোল্ডের দাম প্রতি আউন্সে তিন হাজার ৬৯৯ ডলার ছাড়িয়ে যায়, যা সর্বকালের সর্বোচ্চ রেকর্ড। দিনের শেষে এটি কিছুটা কমে তিন হাজার ৬৯৬ দশমিক ৩৪ ডলারে দাঁড়ায়। একই সময়ে, ডিসেম্বরের জন্য মার্কিন গোল্ড ফিউচারও ০.৪ শতাংশ বেড়ে তিন হাজার ৭৩৩ দশমিক ৭০ ডলারে লেনদেন হয়েছে।
স্বর্ণের দামের এই উল্লম্ফনের মূল কারণ হলো মার্কিন ডলারের দুর্বলতা। প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় ডলার দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে এসেছে, যার ফলে অন্যান্য মুদ্রার অধিকারী ক্রেতাদের জন্য স্বর্ণ কেনা সহজ হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ও ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকির কারণে স্বর্ণের চাহিদা বেড়েছে। তবে এর মূল চালিকাশক্তি হলো ফেডারেল রিজার্ভের আগ্রাসীভাবে সুদহার কমানোর সম্ভাবনা। সিএমই ফেডওয়াচ টুল অনুসারে, ১৭ সেপ্টেম্বর দুই দিনের বৈঠকের শেষে ২৫ বিপিএস সুদহার কমানোর সম্ভাবনা প্রায় নিশ্চিত বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি ২০২৫ সালে দুটি সুদহার কমানোর ইঙ্গিত দেওয়া হয়, তাহলে স্বর্ণের দাম আরও বেড়ে তিন হাজার ৭০০ ডলার ছাড়িয়ে তিন হাজার ৮০০ ডলারে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
কমার্জব্যাংক এই বছরের শেষ নাগাদ প্রতি ট্রয় আউন্সে স্বর্ণের দামের পূর্বাভাস তিন হাজার ৬০০ ও ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ তিন হাজার ৮০০ ডলার করেছে। এই বছর সোনার দাম প্রায় ৪১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যার পেছনে রয়েছে— কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর অব্যাহত স্বর্ণ ক্রয়, ডলারের ওপর নির্ভরতা কমানো ও ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে নিরাপদ বিনিয়োগের চাহিদা।

এদিকে, অন্যান্য মূল্যবান ধাতুর দামও বেড়েছে। স্পট সিলভার ০.২ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্সে ৪২.৮১ ডলার হয়েছে, যা সেপ্টেম্বর ২০১১ সালের পর সর্বোচ্চ। প্ল্যাটিনাম ০.৬ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ৪০৭.৭০ ও প্যালাডিয়াম ১.৬ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ২০৩.১৯ ডলার হয়েছে।