ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাদের মারধরের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন ছাত্রলীগকর্মীরা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাবি শাখার দুই নেতাকে মারধরের ঘটনায় ছাত্রলীগকর্মীরা ক্ষমা চেয়েছেন। সোমবার (২২ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ক্ষমা চান তারা। এ সময় ওই ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগকর্মীরা ছাড়াও ছাত্র অধিকার পরিষদ এবং মানবাধিকার বিষয়ক শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘স্টুডেন্টস অ্যাগেইনস্ট টর্চারের (স্যাট) নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
গত শুক্রবার (১৯ আগস্ট) দুপুর ১টার দিকে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির সামনের ফুটপাতে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার ব্যক্তিরা হলেন ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাবি শাখার দপ্তর সম্পাদক সালেহউদ্দিন সিফাত ও অর্থ সম্পাদক আহনাফ সাঈদ খান। তাদের মাথা, পা, ও বুকে আঘাত করা হয় এবং তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। সিফাত ও সাঈদ দুজনেই স্যাট’র গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বেও আছেন।
এ ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগকর্মীরা হলেন- আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী তানজিল তুষার, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের হেদায়েত উল্লাহ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ইত্তেজা হোসেন রাকিব, পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের আব্দুল্লাহ আল মাসুরুর রুদ্র, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সুমন আলী এবং স্যার এ এফ রহমান হল ছাত্রলীগ কর্মী রোকনুজ্জামান রোকন। সংবাদ সম্মেলনে এরা সবাই উপস্থিত ছিলেন।
ছাত্রলীগকর্মীদের পক্ষে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ইত্তেজা হোসেন রাকিব বলেন, ‘আমাদের এক বন্ধুকে মারধর করা হচ্ছে এমন মিসইনফরমেশন পেয়ে আমরা সেখানে যাই এবং অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে উনাদের আঘাত করে বসি। আমরা ইচ্ছেকৃতভাবে এমনটি করিনি। এর দায় সম্পূর্ণ আমাদের, ছাত্রলীগের নয়। ছাত্রলীগ থেকে আমাদের আদেশ করা হয়নি, আমরা ব্যক্তি উদ্যোগে এখানে এসেছি।’
স্যাট প্রতিনিধি আনাস ইবনে মুনির বলেন, ‘আমাদের হেড অব ডিরেক্টরস সালেহ উদ্দিন সিফাত ও ডকুমেন্টেশন ডিরেক্টর আহনাফ সাঈদ খানের ওপর তারা অতর্কিত হামলা চালায়। এ ঘটনায় দুজনই ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিয়েছেন। আমরা এ ঘটনায় মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু অভিযুক্তরা তাদের দোষ স্বীকার করেছে এবং ভবিষ্যতে এমন কিছু না করার কথা দেওয়ায় আমরা মামলা করা থেকে বিরত থাকছি।’
ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেন বলেন, ‘এটি একটি সুন্দর দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল। তারা তাদের ভুল বুঝতে পেরেছে এবং ক্ষমা চেয়েছে। আশা করছি ভবিষ্যতে তারা তো নয় বরং কোনো ছাত্রলীগকর্মীই ক্যাম্পাসের কোনো শিক্ষার্থীর ওপর নির্যাতন করবে না। আমরা চাই, ক্যাম্পাসে সব শিক্ষার্থী সমান সুযোগ-সুবিধা ভোগ করুক এবং সহ-অবস্থান নিশ্চিত হোক।’