ইবিতে প্রশাসনিক মিটিং শেষে ‘আওয়ামীপন্থি’ শিক্ষককে ধাওয়া

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ভর্তি পরীক্ষাসংক্রান্ত মিটিং শেষে এক শিক্ষককে ধাওয়া দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ—ওই শিক্ষক জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানের সময় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কট্টর বিরোধিতা করেছিলেন এবং এখনও ফেসবুকে তিনি পোস্ট দেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ‘জয় বাংলা’ বলবেন।
আজ মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বেলা সাড়ে ১২টায় এ ঘটনাটি ঘটে।
ইবির ওই শিক্ষক হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সভাপতি ও সাবেক সহকারী প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম।
‘আওয়ামীপন্থি’ শিক্ষক শহীদুল ইসলামের উপস্থিতি জানতে পেরে সভাপতি কার্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীরা প্রায় আধাঘণ্টা বিক্ষোভ করে। পরে প্রক্টরিয়াল বডির সাহায্যে তিনি বিভাগ ত্যাগ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, প্রশাসন ভবনের তৃতীয় তলার কনফারেন্স রুমে ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত অ্যাকাডেমিক মিটিং চলাকালে শিক্ষার্থীরা তার উপস্থিতি জানতে পারে। শিক্ষার্থীরা প্রথমে প্রশাসন ভবনে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে প্রক্টরিয়াল বডির সাহায্যে প্রশাসন ভবন থেকে বের করে দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসন ভবনের সামনে থেকেই শিক্ষার্থীরা তাকে ধাওয়া দেন। একপর্যায়ে তিনি নিজ বিভাগে আশ্রয় নেন। শিক্ষার্থীরা সেখানে গিয়েও বিক্ষোভ চালিয়ে যান। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গাড়িতে করে শহীদুল ইসলামকে বিভাগ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডরমিটরিতে নিয়ে যাওয়া হয়।

এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ‘শহীদুলের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘দালালদের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘আওয়ামী লীগের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’-ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
বিক্ষোভকারীরা বলেন, আওয়ামী লীগের সমর্থকেরা এখনো কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ে অংশ নেওয়ার সুযোগ পান? শহীদুল ইসলাম এখনও তার বিভাগের সভাপতির পদে বহাল আছেন। সারা দেশে এতোগুলো শিক্ষার্থীর মৃত্যু ঘটার পরও তাদের লজ্জা হয়নি—তারা এখনও পদে বহাল আছেন। তার মধ্যে এখনও কোনো অনুশোচনা নেই; বরং তিনি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে মুজিব চেতনা প্রদর্শন করেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, ‘শিক্ষক শহীদুল ইসলাম আমাদের কাছে নিরাপত্তা চেয়েছিলেন। তাই আমরা সেখানে উপস্থিত হয়েছিলাম। তার বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তিনি এখন বিশ্রামের সময় চেয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে পরবর্তী সময়ে আলোচনা করা হবে।’