শেষ হলো ‘এপেক্স অ্যাস্ট্রো-অলিম্পিয়াড’ এর চূড়ান্ত বাছাই, রাশিয়া যাবে সেরা পাঁচ

স্কুল–কলেজের ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী তরুণদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হলো দেশের অন্যতম বড় বিজ্ঞানভিত্তিক আয়োজন ‘এপেক্স অ্যাস্ট্রো-অলিম্পিয়াড ২০২৫’-এর জাতীয় বাছাই পর্ব। আজ শনিবার রাজধানীর আফতাবনগরের ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে দিনব্যাপী চলা এই আয়োজনে প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ প্রায় ৩১০ জন প্রতিযোগীর মধ্য থেকে ৩০ জন নির্বাচিত হয়েছেন। এই ৩০ জনের মধ্য থেকেই আগামী ২৯ ও ৩০ জুলাই ক্লোজড ক্যাম্পে চূড়ান্তভাবে বেছে নেওয়া হবে পাঁচজন, যারা বাংলাদেশের হয়ে অংশ নেবে ওপেন ওয়ার্ল্ড অ্যাস্ট্রোনমি অলিম্পিয়াড ২০২৫-এ, রাশিয়ার মাঠে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারপারসন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের প্রায় পাঁচ কোটি তরুণ যদি বিজ্ঞান, কারিগরি ও প্রযুক্তিতে দক্ষ হয়ে ওঠে, তাহলে সীমিত সম্পদেও দেশ অভাবনীয় অগ্রগতি অর্জন করতে পারবে।’ অলিম্পিয়াডের আন্তর্জাতিক আয়োজক ও রাশিয়ান প্রতিনিধি মিখাইল গাব্রিলভ বলেন, ‘সবাই বিজ্ঞানী হবে না, কিন্তু জ্যোতির্বিজ্ঞান শেখার মাধ্যমে সবাই এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা অর্জন করবে।’ ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক শামস রহমান বলেন, ‘মহাকাশের জ্ঞান এখন কেবল বিলাসিতা নয়, ভবিষ্যতে তা মানবজাতির প্রয়োজনীয় সম্পদ আহরণের পথও তৈরি করবে।’
আয়োজনে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাদুশিল্পী জুয়েল আইচ। তিনি তরুণদের উদ্দেশে বলেন, ‘বিজ্ঞানী না হলেও বিজ্ঞানমনস্ক হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। তার জন্য শুধু প্রযুক্তি নয়, জানতে হবে দর্শন, সাহিত্য, সংস্কৃতিও।’
এবারের প্রতিযোগিতায় সিনিয়র গ্রুপে প্রথম হয়েছে নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী নাবিল নাহিয়ান। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে যথাক্রমে আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী রাদিত রাইয়ান ও ময়মনসিংহ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী নওমী মানাম। জুনিয়র গ্রুপে প্রথম হয়েছে যশোর পুলিশ লাইন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. মখদুম আমিন। দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছে ময়মনসিংহের ইউনিক প্রগ্রেসিভ স্কুলের সাহাদাত হোসেন এবং চট্টগ্রামের বন্দর মোহাম্মদীয়া দাখিল মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ শাফি বিন নাহিদ।
বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেরা ২০ জন পেয়েছে নগদ অর্থ পুরস্কার, আর সবার জন্য ছিল সনদ ও ক্রেস্ট। জাতীয় বাছাইয়ে উত্তীর্ণ ৩০ জন শিক্ষার্থী ক্লোজড ক্যাম্পে অংশ নিয়ে নিজেদের আরেক ধাপ এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাবে। সেখান থেকেই নির্বাচিত পাঁচজন অংশ নেবে ওপেন ওয়ার্ল্ড অ্যাস্ট্রোনমি অলিম্পিয়াড ছাড়াও ২৯তম আন্তর্জাতিক অ্যাস্ট্রোনমি অলিম্পিয়াড এবং এশিয়ান-প্যাসিফিক অ্যাস্ট্রোনমি অলিম্পিয়াডে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাদুশিল্পী জুয়েল আইচ, রাশিয়ার প্রফেসর মিখাইল গাব্রিলভ, প্রফেসর শামস এ রহমান, এবং সাহাপার আলম। সভাপতিত্ব করেন জ্যোতির্বিজ্ঞানী মশহুরুল আমিন।

বাছাই কার্যক্রম পরিচালনায় ছিলেন জুরি বোর্ডের সদস্যরা কবি ও প্রভাষক লোপা মমতাজ (নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয়), খালিদ মাহবুব (প্রভাষক,ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি), রবিন ফকির, ফরিদউদ্দিন আহমেদ এবং মাসুদুল হাসান জায়েদী (সদস্য, বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন)।
বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন আয়োজন করছে এই বিজ্ঞান উৎসবের। টানা দ্বিতীয় বছরের মতো টাইটেল স্পনসর হিসেবে আছে এপেক্স।