চাঁদা না দেওয়ায় ব্যবসায়ীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও! গ্রেপ্তার ৩
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার শংকরবাটি বটতলাহাট এলাকায় চাঁদা না দেওয়ায় এক ব্যবসায়ীকে মারধরের পর বিবস্ত্র করে রাস্তায় ঘোরানো হয়েছে। এতে জেলাজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
গত ১১ ডিসেম্বর রাতের এ ঘটনার পর আজ রোববার ওই ব্যবসায়ী সদর থানায় সাতজনের নাম উল্লেখসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মামলায় আসামি করা হয়েছে পৌরসভার জয়নগর মিরপাড়ার বাক্কার (৩২), বটতলাহাট লিচুতলার আশিক (২২), শংকরবাটি বটতলাহাটের সোহাগ (২৮), কালিগঞ্জ বাবুপাড়ার আনাস (২৬), জয়নগর মিরপাড়া শাকিল (৩২), আজাইপুর গ্রামের শুভ (২২), অনিকসহ (১৯) আরও পাঁচ-ছয়জনকে।
পুলিশ ভাইরাল ভিডিও দেখে গতকাল শনিবার রাতে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
মামলার এজাহারে ওই ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন, গত ১১ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে পৌরসভার জয়নগর মিরপাড়ার রায়হান আলীর বাড়িতে পাওনা ৩০ হাজার টাকা চাইতে গেলে পরিকল্পিতভাবে ১৩-১৪ জন মিলে তাঁকে আটকে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় তারা তাঁকে মারধর করে এবং চাকু দেখিয়ে তাঁর কাছে থাকা ১৪ হাজার টাকা এবং একটি মোবাইলফোন ছিনিয়ে নেয়। এরপর তাঁকে বিবস্ত্র করে রাস্তায় ঘোরায়। বিবস্ত্র করে রাস্তায় ঘোরানোর সময় তারা মোবাইল ফোনে সেই ভিডিও ধারণ করে।
মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়, এরপর মোবাইল ফোনে ধারণ করা ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তারা আরও এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তাদের দাবি করা চাঁদার টাকা না দেওয়ায় সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় তারা।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, বিবস্ত্র অবস্থায় ওই ব্যবসায়ীকে একদল যুবক বটতলাহাট এলাকার রাস্তা দিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এ সময় ওই যুবকদের উল্লাস করতেও দেখা যায়। ৫৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে ওই ব্যবসায়ীর কান্নার শব্দের পাশাপাশি উল্লাস করা যুবকদের মধ্যে একজনকে বলতে শোনা যায়, ‘উচিত শিক্ষা হয়েছে।’
স্থানীয়রা জানায়, রাতে বিবস্ত্র করে রাস্তা ঘোরানোর সময় ওই ব্যবসায়ীর স্বজনরা খবর পেয়ে সেখানে গেলে যুবকরা তাঁকে রাস্তায় ফেলে চলে যায়।
আটক করা সোহাগ, আনাস ও শাকিলকে ওই ব্যবসায়ীর করা মামলা গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আলমগীর জাহান জানান, লোকলজ্জা ও স্থানীয়দের ভয়ে ওই ব্যক্তি প্রথমে মামলা করেননি। শনিবার রাত ৯টার দিকে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার বিষয় জানতে পেরে পুলিশ রাতেই ওই ব্যক্তির বাড়ি গিয়ে নিরাপত্তার আশ্বাস দিলে তিনি আজ মামলা করেন।
ওসি বলেন, ‘ভাইরাল ভিডিও দেখে গতকাল রাতেই বটতালহাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করি। এরমধ্যে একজনের মোবাইলফোনে ওই রাতের ধারণ করা ভিডিও পাওয়া যায়। এ ঘটনায় পুলিশ সাতজনকে শনাক্ত করেছে। বাকিদের শনাক্তে পুলিশ কাজ করছে।’