১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ১২৯ তরুণ-তরুণী

ভিন্ন পথে নয়, সম্পূর্ণ মেধা যাচায়ের মাধ্যমেই পুলিশে চাকরি পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন বগুড়ায় রিক্রুট কনস্টেবল পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা। গতকাল রোববার (১৯ মার্চ) রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ লাইন্সে বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করেন। চাকরি নামের সোনার হরিণ যে এত সহজে ধরা দেবে ভাবতে পারেনি পুলিশে চাকরি পাওয়া ১২৯ তরুণ-তরুণী।
১২০ টাকা ব্যয়ে (ব্যাংক ড্রাফট) ১২৯ জন চাকরি পাওয়া পুলিশ কনস্টেবলের মধ্যে ১১০ জন পুরুষ ও ১৯ জন নারী । বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করেন ও নির্বাচিত ১২৯ জনকে ফুল দিয়ে বরণ করেন।
জেলা পুলিশ জানায়, মুক্তিযুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধকারী বাহিনী বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমূর্তি অব্যাহত রাখতে আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রেখে শুধু মেধা এবং প্রয়োজনীয় যোগ্যতার ভিত্তিতেই এবারে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ সম্পন্ন করা হয়েছে। এই নিয়োগর ক্ষেত্রে কোথাও যাতে কোনো আর্থিক লেনদেন বা অন্য কোনো অনিয়ম না হয় সে বিষয়ে গোপন তৎপরতা অব্যাহত রেখেই কনস্টেবল নিয়াগে সুষ্ঠুভাবে যাচাই-বাছাই করা হয়েছে।
জেলা পুলিশ সূত্র থেকে জানা গেছে, ১২৯ জন নিয়োগপ্রাপ্ত কনস্টেবলের মধ্যে অধিকাংশই অতিদরিদ্র পরিবার থেকে এসেছেন।
গত বছরের ডিসেম্বরে ১২০ টাকা ব্যাংক ড্রাফট করে চার হাজার ৫১৫ জন ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে নিয়োগ পরীক্ষায় আবেদন করেন।
এরপর বগুড়া পুলিশ লাইনে নতুন নিয়মে প্রিলিমিনারি স্ক্রিনিং শেষে দুই হাজার ৮৩০ জন তরুণ ও ৪৮৭ জন তরুণী পরীক্ষায় অংশ নেন। এতে সাতটি শারীরিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বিভিন্ন ধাপ শেষ করে এক হাজার ৯৩৫ তরুণ এবং ১৮১ জন তরুণী বাচাই করা হয়। এরপর ৩ মার্চ দৌড়, পুশআপ, লং জাম্প, ও হাই জাম্প করে সব কোটায় এক হাজার ৪৭৬ জন তরুণ-তরুণী উত্তীর্ণ হয়ে গত ৯ মার্চ লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিয়ে গতকাল রোববার বিকেল থেকে মৌখিক পরীক্ষায় ১২৯ জন তরুণ-তরুণী পাশ করেন।
তরুণদের মধ্যে সদরের লাহিড়ীপাড়া ইউনিয়নের বুজরক মাঝিড়া এলাকার মো. ইকবাল হোসেনের ছেলে আবু মুছা আশায়ারী বলেন, ‘আমি কল্পনাও করতে পারিনি আমার ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি হবে। আমার ধারণা ছিল যদি আমি পরীক্ষাতেও পাশ করি তাহলে হয়তো ঘুষ দিতে হবে। কিন্তু আমার ধারণা ভুল প্রমাণ করে কোনো ঘুষ ছাড়াই পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদ পাস করলাম। এটা এক বিরাট পাওয়া।’
শেরপুরের চাকরি পাওয়া তরুণী স্বপ্না আক্তার বলেন, ‘মাত্র ১২০ টাকা খরচে চাকরি নামের সোনার হরিণ ধরা দেবে- এ যেন স্বপ্নের মত লাগছে।’
এ সময় অন্যদের মধ্যে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) গাজিউর রহমান, জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বড়ইগ্রাম সার্কেল) মো. রাজীব, বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শরাফত ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) হেলেনা আকতার, সহকারী পুলিশ সুপার (শিবগঞ্জ-সোনাতলা) তানভীর হাসান উপস্থিত ছিলেন।