যারা স্থানীয় নির্বাচনের কথা বলছেন তাদের উদ্দেশ্য দুরভিসন্ধিমূলক : মির্জা আব্বাস

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, কোনভাবেই জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন নয়। যারা আগে স্থানীয় নির্বাচনের কথা বলছেন, তাদের উদ্দেশ্য দুরভিসন্ধিমূলক, ষড়যন্ত্রমূলক। আমরা লড়াই সংগ্রাম করেছি জাতীয় নির্বাচনের জন্য। আগে কেনো স্থানীয় নির্বাচন? এটি হলো যাদের গ্রামগঞ্জে পায়ের তলায় মাটি নেই, তাদের প্রতিষ্ঠিত করার পায়তারা।
নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাড়ার খানপুর রোডে জেলা বিএনপি আয়োজিত জনসভায় আজ মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা আব্বাস এসব কথা বলেন।
বিডিআর হত্যাযজ্ঞ প্রসঙ্গে মির্জা আব্বাস বলেন, এই হত্যার বিচারের নামে প্রহসন করা হয়েছে। বিনা অপরাধে প্রায় দেড়দশক সাধারণ সিপাহিদের আটক রাখা হয়েছে। সেদিন প্রশিক্ষিত একটি প্রাতিষ্ঠানিক গ্রুপ তাদের হত্যা করেছে। যাদের বিচার হয়েছে তারা নির্দোষ। জেলের ভিতর তাদের কান্না দেখে নিজের চোখের জল ধরে রাখতে পারিনি। যারা শাহাদাত বরণ করেছে তাদের ফেরত আনতে পারব না। সত্যিকারের দোষীদের আড়াল করতেই নির্দোষদের ফাঁসানো হয়েছে। যারা বিনাদোষে আটক রয়েছে তাদের কেনো ছাড়া হচ্ছে না।
মির্জা আব্বাস বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভয়াবহ। ছিনতাই খুন রাহাজানিতে অতিষ্ট দেশবাসী। কিন্তু কারা এগুলো করছে? কারা বলেছিল দিনের বেলায় চলতে না পারলে আমরা রাতে কাউকে চলতে দিব না। ভারতে বসে এদেশকে অস্থির করার চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু এগুলো করে দেশের মানুষের ঐক্য ভাঙা যাবে না। দেশের মানুষকে শান্তিতে ঘুমাতে দিবেন না। এই সরকার যখন ক্ষমতায় আসে আমরা সমর্থন করেছিলাম। বলেছিলাম এই সরকার ব্যর্থ হলে দেশ ব্যর্থ হবে। তাই বলে আজীবন ক্ষমতায় থাকার ম্যান্ডেট কেউ আপনাদের দেয়নি।
মির্জা আব্বাস বলেন, কয়েকজন ভদ্রলোক আছেন, তারা বলেন- যারা নির্বাচন চান তারা দেশের ভালো চান না। কোথায় ছিলেন আপনারা। ১৭টি বছর আমরা জনগণকে সাথে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। হাজার হাজার মানুষ শহীদ হয়েছে, গুম হয়েছে। আমরা নির্বাচন চাই ক্ষমতায় আসার জন্য নয়, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য।
মির্জা আব্বাস আরও বলেন, একশ্রেণির লোক বিএনপিকে নিয়ে বিষোদগার করছেন। অপকর্ম করছে একজন, আর নাম পড়ছে বিএনপির। বিএনপির জনপ্রিয়তা দেখে আজকে কতিপয় দল বিএনপিকে আওয়ামী লীগের দিকে ধাবিত করছে, ভারতের দালাল বানানোর চেষ্টা করছে। বিএনপি যদি ভারতের দালালি করতো তাহলে জিয়াউর রহমানকে জীবন দিতে হতো না। বিএনপি একটি বড় দল। এখানে কয়েকজন চাঁদাবাজ দখলবাজ থাকতে পারে। তাদের অবস্থান বিএনপিতে নেই। তাদেরকে আইনের হাতে সমর্পণ করুন।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, দ্রব্যমূল্য অসহনীয় হয়ে পড়েছে। সরকার সংস্কারের কথা বলছেন। হাতের কাছে যে সংস্কার আছে তা করছেন না কেনো? হাসিনার পতনের দুদিন আগে ব্যবসায়িক সিন্ডিকেটরা কে কি বলেছে। একজন বলেছে আপনার নির্দেশের বাইরে আমরা যাব না, আরেকজন বলেছে মৃত্যুর পরও আমরা আপনার সাথে আছি। সে সিন্ডিকেট কী ভেঙেছেন? যতদিন পর্যন্ত সে সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারবেন ততদিন দ্রব্যমূল্যসহ কিছুই নিয়ন্ত্রণে আসবে না। বরং বর্তমান সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট অনেকে তাদের অফিসে গিয়েছেন। সেসব সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা আছে তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। কেউ কেউ বলছেন, নির্বাচনের কথা যারা বলে তারা জাতির শত্রু। তাহলে বলে দেন বাংলাদেশে আর নির্বাচনের দরকার নেই। হাসিনা যেভাবে দেশ চালিয়েছে সেভাবেই চালান। দেখি পারেন কিনা?
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদের সভাপতিত্বে এতে ঢাকা বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু, নজরুল ইসলাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা মাহমুদুর রহমান সুমন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিম, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দিপু ভূইয়া, মাসুকুল ইসলাম রাজু, কাজী মনিরুজ্জামান মনিরসহ জেলা ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।