ভাঙ্গায় মুখোমুখি জাফরউল্লাহ-নিক্সনের সমর্থকরা
একটি সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় মুখোমুখি অবস্থান নেয় স্থানীয় স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মুজিবর রহমান চৌধুরী নিক্সন এবং আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহর সমর্থকরা।
পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. হাসান হাবীব গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেন। এ সময় এলাকায় পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়।
এ অবস্থার মধ্যেই সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরী উপজেলার মুনসুরাবাদ ও ভীমেরকান্দা গ্রামের মধ্যবর্তী খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন এবং সেখানে জনসভা করেন।
জানা যায়, স্থানীয় হামিরদী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন ও তাঁর সমর্থকরা সম্প্রতি সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরীর পক্ষে অবস্থান নেন। এ জন্য আজ বিকেলে স্থানীয় মুনসুরাবাদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জনসভার আয়োজন করা হয়। এ জন্য আয়োজকদের পক্ষ থেকে এলাকায় ব্যাপক মাইকিং ও প্রচার চালানো হয়।
এর মধ্যে কাজী জাফরউল্লাহর পক্ষের ভাঙ্গা উপজেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগ একই স্থানে ও একই সময়ে পাল্টা জনসভার ডাক দেয়। এ নিয়ে উভয় পক্ষের সমর্থকরা ব্যাপক শোডাউন করে এবং মুখোমুখি অবস্থান নেয়। এরই মধ্যে প্রশাসন ১৪৪ দারা জারি করে।
একপর্যায়ে ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ভাঙ্গা বিশ্বরোড মোড়ে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে টায়ার জ্বালিয়ে কাজী জাফরউল্লাহর পক্ষের স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
জনসভাস্থলে ১৪৪ ধারা জারি হওয়ায় নিক্সন সমর্থকদের মধ্যে চরম উত্তেজনা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। কিন্তু সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরী যে কোনো মূল্যে জনসভা করার ঘোষণা দেন।
আজ বিকেলে ভিন্ন সড়ক দিয়ে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পথ হেঁটে হাজারো সমর্থক নিয়ে নিক্সন চৌধুরী মুনসুরাবাদ ও ভীমেরকান্দা গ্রামের মধ্যবর্তী খালের ওপর সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন।
পরে হামিরদী ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরের জনসভায় বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য। ১৪৪ ধারার কারণে মঞ্চ তৈরি করতে না পারায় নিক্সন চৌধুরী ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের ছাদে উঠে বক্তব্য দেন।
স্থানীয় হামিরদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শামছুল আলম রাসেলের সভাপতিত্বে সভায় নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র। আমি মাত্র ২৮ দিন নির্বাচনী প্রচার চালিয়ে এমপি হয়েছি। শতকরা ৭৫ জন লোক আমাকে না দেখে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। আপনাদের এ মর্যাদা আমি কখনো ভুলব না।’
সভায় আরো বক্তব্য দেন ভাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান মো. শাহাদাত হোসেন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।