অনুবাদের বই আসছে, আগ্রহও অনেক
অমর একুশে গ্রন্থমেলার ষষ্ঠদিন আজ বুধবার। আজ বইমেলায় বইপ্রেমী দর্শনার্থী-ক্রেতাদের সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মতোই। এবারের মেলা প্রাঙ্গণে পযাপ্ত জায়গা থাকায় মানুষ খুব আরামে হাটাচলা করতে পারছে। অন্যান্য বারের মতো এবারের মেলাতেও পাঠকদের দৃষ্টিতে আছে অনূদিত গ্রন্থ। সন্দেশ, নালন্দা, ঐতিহ্য, দিব্যসহ যেসব প্রকাশনী অনুবাদের বই বেশি করে তাদের স্টলে পাঠকের সমাগম বেশি দেখা গেছে। বিদ্যা প্রকাশে এক পাঠকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনি ইতিহাসের অনূদিত বই পড়তে পছন্দ করেন। নালন্দা প্রকাশনীতে বিক্রয়কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা ক্লাসিক সাহিত্যের অনুবাদ বেশি বিক্রি করছেন। বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত হয়েছে মিসরীয় লেখক ও সাংবাদিক মোহসেন আল-আরিশির লেখা ‘শেখ হাসিনা : যে রূপকথা শুধু রূপকথা নয়’ বইটি। আরবি থেকে অনুবাদ করেছেন ইসফান্দিয়র আরিওন। বইটিতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলি ও সংগ্রামী দিনলিপি উঠে এসেছে। পাঠক এ বইটি কিনছেন বলে জানা গেছে। অন্যান্য স্টলগুলোতেও অনুবাদের বইগুলো পাঠক নেড়েচেড়ে দেখছেন, কিনছেন।
নতুন বই
মেলার ষষ্ঠ দিন প্রতিটা প্রকাশনী সংস্থা থেকে বেশকিছু নতুন বই এসেছে। এ দিনে বাংলা একাডেমিতে নতুন বই জমা পড়েছে ১৫২টি। এ পযন্ত নতুন বই জমা পড়ল ৬৬২টি। গল্প-উপন্যাস-কবিতা-প্রবন্ধ-অনুবাদ-শিশুসাহিত্য সব ধরনের বই আছে এ তালিকায়। তবে কবিতার বই সবচেয়ে বেশি এসেছে। গল্প ও উপন্যাসের বইও এসেছে পর্যাপ্ত।
আলোচনা পর্ব
দ্বিতীয় দিন থেকে শুরু হয়েছে বইমেলার মূল মঞ্চের আলোচনা পর্ব। আলোচনা পর্বটি শুরু হয় বিকেল ৪টায়। আজকের আলোচনার বিষয় ছিল : কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় : জন্মশতবার্ষিকী শ্রদ্ধাঞ্জলি। মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন আবুল হাসনাত। আলোচক হিসেবে ছিলেন বিমল গুহ, গোলাম কিবরিয়া পিনু ও শোয়াইব জিবরান। সভাপতিত্ব করেন আসাদ চৌধুরী। এরপর শুরু হয় কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, আবৃত্তি ও সংগীত সন্ধ্যা। চলবে রাত ৮টা পযন্ত।
লেখক বলছি
অমর একুশে গ্রন্থমেলার এবারের সংযোজন 'লেখক বলছি' মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন প্রবন্ধকার অজয়দাশ গুপ্ত, কবি ফরিদ কবির, কবি জাহানারা পারভীন, কবি চঞ্চল আশরাফ ও কবি মন্দিরা এষ।
উল্লেখ্য, এ মঞ্চে বিকেল ৫টা থেকে ৭টা পর্যন্ত প্রতিদিন পাঁচজন করে লেখক উপস্থিত থাকেন। প্রত্যেকে ২০ মিনিট করে এই মেলায় প্রকাশিত বই নিয়ে কথা বলেন। সঞ্চালনায় থাকেন বাংলা একাডেমির কর্মকর্তারা।
অংশগ্রহণের পদ্ধতি
আগ্রহী লেখক বা বইয়ের প্রকাশক মেলার মূল তথ্যকেন্দ্রে এক কপি বই জমা দেবেন। বাংলা একাডেমির ভেতরে এই তথ্যকেন্দ্রে বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত বই জমা নেওয়া হয়। এর জন্য কোনো ফি লাগবে না। নির্বাচিত বইয়ের লেখকের সঙ্গে যোগাযোগ করে নির্ধারিত সময় জানিয়ে দেওয়া হবে। বাংলা একাডেমি থেকে মনোনীত বই বাছাই উপকমিটি এই বই বাছাই করবে। বইয়ের প্রকাশকাল হতে হবে মার্চ ২০১৮ থেকে ফেব্রুয়ারি ২০১৯।
মোড়ক উন্মোচন
মেলার ষষ্ঠদিন মোড়ক উন্মোচন মঞ্চে মোড়ক উন্মোচন করা হয়, পাঁচটি বইয়ের।
অংশগ্রহণের পদ্ধতি
আগ্রহী লেখক বা বইয়ের প্রকাশক মেলার মূল তথ্যকেন্দ্রে মোড়ক উন্মোচনের উদ্দেশ্যে বই জমা দেবেন। এজন্য তাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি জমা দিতে হবে। বাংলা একাডেমির ভেতরে এই তথ্যকেন্দ্রে বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত বই জমা নেওয়া হয়।
লিটলম্যাগ চত্বর
লিটলম্যাগ চত্বরের স্টলগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অনেকের বইমেলা উপলক্ষ্যে প্রকাশিত সংখ্যা এখনো মেলায় আসেনি। নতুন সংখ্যা প্রেসে আছে। বেশ কটি পত্রিকা জানুয়ারিতেই তাদের বইমেলা সংখ্যা প্রকাশ করে ফেলেছে। লিটলম্যাগ চত্বরে লোকসমাগম চোখে পড়ার মতো নয়। লেখক-সম্পাদকের আড্ডার এই মিলনকেন্দ্রটি সোহরাওয়ার্দী প্রাঙ্গণের অংশে সরিয়ে নিলে ভালো হবে বলে লিটলম্যাগকর্মীরা জানান।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার মেলার সপ্তম দিন। মেলা শুরু হবে বিকেল ৩টায়, চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।