বইমেলায় শান্তনু চৌধুরীর তিন বই
অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশ হয়েছে শান্তনু চৌধুরীর তিনটি বই। ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ (প্যাভিলিয়ন ১৯) থেকে বেরিয়েছে ‘টেলিভিশন সংবাদ : উপস্থাপনা ও কৌশল’, দাম ১৫০ টাকা। বেহুলা বাংলা (স্টল ১২৩-১২৪) প্রকাশ করেছে প্রেম ও দেশাত্মবোধের উপন্যাস ‘অর্ধেক প্রেমিকা’, দাম ২০০ টাকা। কালো (স্টল ৩৩৬) প্রকাশ করেছে সরস রচনা ‘যৌথ জীবনের বিদ্যা’, দাম ২০০ টাকা। সব প্রকাশনীর স্টল বাংলা একাডেমির পাশে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।
বইগুলো সম্পর্কে লেখক যা বলেছেন, নিচে তা দেওয়া হলো :
টেলিভিশন সংবাদ উপস্থাপনা ও কৌশল
সময় এখন টেলিভিশন সাংবাদিকতার। সাহসী ও আলোচিত পেশা বলা যায় এটিকে। তরুণ-তরুণীরা নিজেকে মেলে ধরার জন্য ঝুঁকছেন এই পেশায়। তুলে আনছেন তৃণমূল থেকে আলোচিত নানা প্রতিবেদন। হাতে বুম, কাঁধে ব্যাকপ্যাক, ট্রাইপড, ক্যামেরা নিয়ে একেক জন ছুটে চলছেন এখান থেকে সেখানে। নিরন্ন মানুষ থেকে বিপন্ন মানুষ। সন্ত্রাসের শিকার থেকে শিকারী, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি থেকে বিশ্ব মোড়ল। দেশ থেকে বিদেশ সবখানেই সরব উপস্থিতি টিভি সাংবাদিকদের। প্রকৃতপক্ষে সাংবাদিকতা তাত্ত্বিক নয়, ব্যবহারিক জ্ঞান। বলা যেতে পারে পেশা হিসেবে টেলিভিশন সাংবাদিকতা এখন বেশ আগ্রহ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের কাছে। এর মধ্যে সবারই স্বপ্ন থাকে সংবাদ উপস্থাপক হওয়ার। তাই এ নিয়ে প্রয়োজন আলাদা করে প্রস্তুতির। কারণ এখন আর স্ক্রিপ্ট দেখে খবর পড়ার যুগ নেই।
এখন একজন সংবাদ উপস্থাপক মানে প্রথমেই তিনি একজন সংবাদকর্মী। তাকে ধারণা থাকতে হবে সংবাদ নিয়েও। হয়তো আপনার মধ্যে প্রতিভা রয়েছে। কিন্তু সঠিক গাইডেন্সের অভাবে সেদিকে বেশ অগ্রসর হতে পারছেন না। যারা শুরুতে টিভি সাংবাদিকতায় আসতে চান তাদের সহযোগিতার জন্য নিজের অভিজ্ঞতা থেকে এই বই লিখেছেন শান্তনু চৌধুরী। এটি একইসঙ্গে নিউজ প্রেজেন্টার হওয়ার শুরুর ধাপটা পার হতে যেমন প্রয়োজন তেমনি সাংবাদিক হয়ে উঠার ক্ষেত্রেও প্রস্তুত করবে আপনাকে। সে দিকটি মাথায় রেখেই লেখা হয়েছে বইটি। কারণ তাত্ত্বিক আর প্রায়োগিক জ্ঞানই পারে একজন সফল উপস্থাপক সৃষ্টি করতে। বাকিটা চেষ্টা, ধৈর্য আর সংকল্প। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ।
প্রেম ও দেশাত্মবোধের উপন্যাস ‘অর্ধেক প্রেমিকা’
‘আর ইউ ফ্রম ইন্ডিয়া?’ রুমকি কী বলবে। সোজাসুজি ইয়েস বলাই তো সঠিক। কিন্তু অনেক দিন পর অভির সাথে কথা বলতে বলতে ওর মনে হয় ওর তো আরো একটি দেশ আছে, বাংলাদেশ। ভীষণভাবে অনুভব করে ও। একুশে ফেব্রুয়ারি। যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভ্যানিয়ার বাংলাদেশিরা মিলে বানালো অস্থায়ী শহীদ মিনার। ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে অনেকে এলেন। কেউ কেউ সাদা কালো পাঞ্জাবিও পরল। রুমকির চোখ ভিজে উঠে। আগে কখনো এমন হয়নি। ওর দেশ তো বাংলাদেশ না। বাংলাদেশ ওকে কোনো পরিচয় দেয়নি। ওর সব সনদ ভারতীয়। কিন্তু মনে পড়ে মেয়েবেলায় স্কুলে অভির সাথে এর-ওর গাছ থেকে ফুল চুরি করে ভোরে ভোরে নিয়ে আসত ওরা। এরপর সেই ফুল শহীদ মিনারে। মানুষ এক দেশ থেকে আরেক দেশে গড়ে স্থায়ী ঠিকানা। কিন্তু ভুলে যেতে পারে কি শেকড়। আত্মার টান। যদি সেখানে থেকে যায় শেকড়েরও গভীর কিছু। এই প্রেম, টানাপড়েন, অভি আর রুমকির বদলে যাওয়া সময়, ফের কাছে আসতে চাওয়ার গল্প নিয়েই উপন্যাস অর্ধেক প্রেমিকা। সেখানে রুমকি আছে, আছে আরো অনেকে। যারা ঠিক প্রেমিকা নয়, অর্ধেক প্রেমিকা। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন রাজীব দত্ত।
যৌথ জীবনের বিদ্যা
ঠিক কী হয় প্রেমে। বুকের ভেতর প্রায়ই কিচিরমিচির। ছটফটানি। যেভাবে কথারা আসে যায়। নব্য সখ্যে ইচ্ছেমতন, দিগ্বিদিক। প্রাণের মানুষটিকে কাছে পাওয়ার উদ্বেলতা। শুধুই কী তাই। আধুনিক সময়ে এসে রং বদলেছে ভালোবাসার। প্রেম, যৌনতা, আউটিং এর ফাঁকে সেখানে জায়গা করে নিয়েছে দেশ, সমাজ ও রাষ্ট্রচিন্তা। সেখানে সানি লিওন আছে, আছে সমকামিতা, বিষমকাম ও কামনাহীনতার গল্প, সিনেমার কথা, ধর্মের কথা, কামের প্রবলতার কথা, পরকীয়ার কথা, সাহস আর বৈরিতার গল্প। ক্রিকেট বা ফুটবল নিয়ে আলোচনা। পিল, কনডম, ভায়াগ্রা কিংবা পোশাক-আশাক, ফ্যাশন, স্টাইল। অন্তর্বাস থেকে অজ্ঞাতবাস মানে দুজনে হারিয়ে যাওয়ার গল্প। শেষে ঠোঁট মিলবে ঠোঁটে। পাবে আশ্রয়। ভালোবাসার শর্ত ও দায়ভার, সমস্ত ব্যাপারেই নিয়ত কিছু বোঝাপড়াও এসে যায় শেষ পর্যন্ত। ভালোবাসা তখন শুধুই অভ্যাস। সেই অভ্যাসেই অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া। ভালোবাসা ভিখিরিও করে, আবার ঋণীও করে। সেসব নিয়েই শান্তনু চৌধুরী সরস রচনা ‘যৌথ জীবনের বিদ্যা’। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন আবু হাসান।