ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত
নেত্রকোনায় কয়েক দিন ধরে অব্যাহত ভারি বর্ষণ ও ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জেলার দুর্গাপুর, কলমাকান্দা, বারহাট্টা ও মদন উপজেলায় আবার বন্যা দেখা দিয়েছে। প্লাবিত হয়েছে নেত্রকোনা সদর উপজেলার কালিয়ারা-গাবরাগাতি ইউনিয়নের সবকটি গ্রাম।
গত বৃহস্পতিবার থেকে নেত্রকোনায় ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকায় পাহাড়ি ঢলের পানি নেমে আসায় নেত্রকোনার প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিবন্দি লক্ষাধিক মানুষ। পাহাড়ি ঢলের তোড়ে গতকাল রোববার দুর্গাপুর উপজেলার গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের বন্দ উষান গ্রামের নেতাই নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। এ ছাড়া দুর্গাপুর, কলমাকান্দা ও বারহাট্টা উপজেলার প্রায় ২০টি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, উব্দাখালী নদীর পানি কলমাকান্দা পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, সোমেশ্বরী নদীর পানি দুর্গাপুর পয়েন্টে ৩৩ সেন্টিমিটার ও বিজয়পুর পয়েন্টে ১ সেন্টিমিটার, কংশ নদের পানি জারিয়া পয়েন্টে ২০ সেন্টিমিটার ও নেত্রকোনা পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানিতে তলিয়ে গেছে বেশিরভাগ গ্রামীণ সড়ক। ফলে গ্রামাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা একবারে ভেঙে পড়েছে। বয়স্ক ও শিশুদের নিয়ে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন পানিবন্দি পরিবারগুলো। বন্যার পানিতে অসংখ্য পুকুর তলিয়ে যাওয়ায় লাখ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। বন্যার পানিতে আমন ধানের বীজতলা বিনষ্ট হয়ে গেছে। সাধারণ মানুষ নৌকা ও কলার ভেলা তৈরি করে প্রয়োজনীয় কাজ সেরে নেওয়ার চেষ্টা করছে।
ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসন থেকে দুর্গাপুর, কলমাকান্দা ও খালিয়াজুরী উপজেলায় ২০ মেট্রিকটন করে চাল এবং দুর্গাপুর ও কলমাকান্দায় ৪০০ শুকনা খাবারের প্যাকেট পাঠানো হয়েছে।
গাওকান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব জানান, রোববার ভোরে বন্দ উষান গ্রামের নেতাই নদীর বাঁধটি প্রবল পাহাড়ি ঢলের তোড়ে ভেঙে গেছে। আশা করি সরকার অতিদ্রুত এ বাঁধ নির্মাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা খানম বলেন, ‘গাওকান্দিয়া ইউনিয়নের বন্দ উষান গ্রামের বেড়িবাঁধটি ভেঙে যাওয়ার খবর পেয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জরুরিভিত্তিতে যাতে বেড়িবাঁধটি নির্মাণ করা হয় তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আক্তারুজ্জামান জানান, ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধটি নির্মাণে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।