এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণ’ : আরেক আসামি মাসুম গ্রেপ্তার
সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার ৬ নম্বর আসামি মাহফুজুর রহমান মাসুমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর থেকে গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামছুদ্দোহা এ খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ভারতে পালানোর চেষ্টা করছিলেন মাসুম। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে গতকাল দিবাগত রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ নিয়ে চাঞ্চল্যকর এই মামলায় পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া সন্দেহভাজন দুজন র্যাব হেফাজতে আছে।
এদিকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমান, ৪ নম্বর আসামি অর্জুন লস্কর ও ৫ নম্বর আসামি রবিউলকে গতকাল পাঁচ দিন করে রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।
গত রোববার সকালে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলা থেকে সাইফুর রহমান ও হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার মনতলা এলাকা থেকে অর্জুন লস্করকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেদিন রাতে এ মামলার আরো দুই আসামি শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি ও রবিউল ইসলামকে হবিগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। নবীগঞ্জ উপজেলার এক আত্মীয়র বাসা থেকে রবিউলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
অপরদিকে একই দিন দিবাগত রাতে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার কচুয়া নয়াটিলা এলাকা থেকে এ মামলায় রাজন নামের আরো এক আসামিকে আটক করে র্যাব। তিনি এ মামলার অজ্ঞাতপরিচয় তিন আসামির একজন। রাজনকে আশ্রয় দেওয়া ও সহযোগিতা করায় আইনুল নামের এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়।
জানা গেছে, স্বামীকে নিয়ে ঘুরতে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় এমসি কলেজে গিয়েছিলেন এক গৃহবধূ। এ সময় কলেজ ক্যাম্পাস থেকে পাঁচ থেকে ছয়জন তাঁদের জোরপূর্বক কলেজের ছাত্রাবাসে নিয়ে যায়। সেখানে একটি কক্ষে স্বামীকে আটকে রেখে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে তারা। পরে ওই গৃহবধূকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় গত শনিবার ওই গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো তিনজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার আসামিরা হলেন সাইফুর রহমান (২৮), শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি (২৫), তারেক (২৮), অর্জুন লস্কর (২৫), রবিউল ইসলাম (২৫) ও মাহফুজুর রহমান মাছুম (২৫)। তাঁদের মধ্যে সাইফুর রহমান বালাগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা, রনির বাড়ি হবিগঞ্জে, তারেক সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার বাসিন্দা, অর্জুনের বাড়ি সিলেটের জকিগঞ্জে, রবিউলের বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় আর মাহফুজুর রহমান মাছুমের বাড়ি সিলেটের সদর উপজেলায়।
অভিযোগ উঠেছে, মামলার এই ছয় আসামি ছাত্রলীগের কর্মী। এ বিষয়ে ওসি আবদুল কাইয়ুম জানান, মামলায় ছয়জনকে সরাসরি জড়িত বলে আসামি করা হয়েছে। তবে মামলার এজাহারে তাঁদের ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে উল্লেখ করা হয়নি। অন্য তিনজনের বিরুদ্ধে সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়েছে।
এর আগে অভিযান চালিয়ে মামলার আসামি এম সাইফুর রহমানের কক্ষ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। গত শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে সাইফুরের কক্ষ থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র, চারটি রামদা, একটি ছোরা ও জিআই পাইপ উদ্ধার করা হয়।