ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’ : বাংলাদেশে প্রভাব পড়েনি

বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে গতকালই বুলেটিনে জানানো হয়েছিল, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’ বাংলাদেশ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। ফলে বাংলাদেশের উপকূলে এর আঘাত হানার আশঙ্কা কম।
আজ রোববার রাত সোয়া ৯টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ের আবহাওয়া কার্যালয়ের আবহাওয়াবিদ রুহুল আমিন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এরই মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের ওডিশা ও অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলে আঘাত হেনেছে। বাংলাদেশে এর কোনো প্রভাব নেই। আর প্রভাব পড়বেও না। এটি এখন স্থলভাগে গিয়ে শক্তি হারাবে।’
আজ রাজধানী ঢাকাসহ কোথাও কোথাও বৃষ্টি হয়েছে, তবে সেটি ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’ এর কারণে নাও হতে পারে বলে মনে করেন এই আবহাওয়াবিদ।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এই ঘূর্ণিঝড় নিয়ে গতকাল সন্ধ্যা থেকে মোট পাঁচটি বুলেটিন দিয়েছে। এর মধ্যে সবশেষ বুলেটিন দেওয়া হয়েছে আজ রাত সাড়ে ৭টায়। যেহেতু এর কোনো প্রভাব বাংলাদেশে নেই, এ কারণে এ নিয়ে আজ রাতে আর কোনো বুলেটিন দেওয়া হবে না বলেও জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ রুহুল আমিন।
তবে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখানোর যে নির্দেশনা ছিল তা পরবর্তীতে নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে বলেও আবহাওয়া কার্যালয় জানিয়েছে।
এ ছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তীকে নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
রাত সাড়ে সাড়ে ৭টায় আবহাওয়ার সবশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, ‘উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’ আরও পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় (১৮.৪ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৪.৮ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছিল।
এটি আজ সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৭৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার; যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার কারণে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটে সাগর উত্তাল রয়েছে।
এদিকে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) সন্ধ্যায় জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি আগামী তিন ঘণ্টায় অন্ধ্রপ্রদেশের কলিঙ্গাপত্তনম এবং ওডিশার গোপালপুরের মধ্যবর্তী উপকূল অতিক্রম করবে।
আইএমডি টুইটে বলেছে, ঘূর্ণিঝড় গুলাব উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে আঘাত হেনেছে এবং এইভাবে উত্তর উপকূলীয় অন্ধ্রপ্রদেশ ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ উপকূলীয় ওডিশায় ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পরবর্তী তিন ঘণ্টার মধ্যে কলিঙ্গাপত্তনম থেকে ২৫ কিলোমিটার উত্তরে কলিঙ্গাপত্তনম এবং গোপালপুরের মধ্যে উপকূল অতিক্রম করবে।
মে মাসে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আঘাত হানার পর চার মাসের ব্যবধানে দ্বিতীয়বার ওডিশায় আঘাত হানল আরেকটি ঘূর্ণিঝড়, যার নাম গুলাব।