দৃষ্টিপাত
ব্যতিক্রমী ‘ভালোবাসা’
বর্তমান প্রজন্মের কাছে ভালোবাসা দিবসের সংজ্ঞাটা আলাদা। এখন ভালোবাসা শব্দটা বলতেই বোঝায়, কোনো তরুণ-তরুণীর মধ্যকার সম্পর্ক। সে হিসেবে সারা বিশ্বে তরুণ-তরুণীর কাছে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের গুরুত্বটা অন্যরকম।
আসলে ভালোবাসার সংজ্ঞা দিয়ে প্রেমিক-প্রেমিকার সম্পর্ক নিরুপণ করা সম্ভব কি? মনে হয় না। সব ভালোবাসাকে একই মাত্রা দিয়ে মাপা যায় না। দিন বদলেছে, বদলে যাচ্ছে ভালোবাসার সংজ্ঞা। ভালোবাসা স্থান, কাল, পাত্র ভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। এবারে গতানুগতিক ভালোবাসার রীতি থেকে সরে এসে অন্যরকম ভাবে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উদযাপন করতে দেখা গেল টাঙ্গাইলের হাতেখড়ি প্রি-প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের।
ভালোবাসা দিবসে মায়ের প্রতি ভালোবাসা দেখাতে এ স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা মায়ের চরণে পানি ঢেলে পা ধুয়ে দিল; সঙ্গে ভালোবাসার উপহার হিসেবে মায়ের গলায় পরাল বিশেষ মেডেল। একেবারে ভিন্ন আঙ্গিকে, ভালোবাসার এ বহিঃপ্রকাশ শ্বাশত এক ভালোবাসার নিদর্শন বলা যেতে পারে। এখানে সন্তান যেমন তার মাকে ভালোবেসেছে, তেমনি মাও তার সন্তানের ভালোবাসায় আবেগ আপ্লুত হয়েছে। এ ভালোবাসার বন্ধন চিরন্তন। অনন্তকাল ধরে এ ভালোবাসা প্রতিটি জীবনের সঙ্গে মিলে মিশে একাকার।
আজকাল প্রায় ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে ব্যতিক্রমী ‘ভালোবাসা’ উপস্থাপনের চিত্র ফুটে উঠছে। এখন পথশিশুদের সঙ্গে ভালোবাসা দিবস পালন করতে দেখা যায়। গরিব-দুঃখীদের সঙ্গে একদিনের জন্য হলেও ঘটা করে ভালোবাসা বিনিময় করছে অনেকে। ভালোবাসা দিবসকে ঘিরে অনাথের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কিংবা, অবহেলিত বৃদ্ধাশ্রমে ভালোবাসা দিবসে হচ্ছে বাড়তি আয়োজন। পথে পথে পুলিশকেও দেখা যায় ভালোবাসার লাল গোলাপ বিলাতে!
যদিও একটা দিনের জন্য এ আয়োজন। তবুও ভিন্নরকম এসব ভালোবাসার বিনিময় খারাপ কিসে? এই এক দিনের জন্য অনেকেই পথ চেয়ে থাকে, ভালোবাসার কাঙাল হয়ে। আসুন না, আমাদের চারপাশে ভালোবাসা বঞ্চিত এসব মানুষের জন্য প্রতিদিনই কিছু ভালোবাসার বরাদ্দ রাখি। সবার মাঝে ছড়িয়ে যাক ভালোবাসা।
লেখক : প্রতিনিধি, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়